নুর মোহাম্মদ ওয়ালি উর রহমান রতন (নীলফামারী) সৈয়দপুর
মার্চ ১৪, ২০২৪, ১১:৫৬ এএম
নুর মোহাম্মদ ওয়ালি উর রহমান রতন (নীলফামারী) সৈয়দপুর
মার্চ ১৪, ২০২৪, ১১:৫৬ এএম
নীলফামারীর সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আম গাছগুলোয় মুকুলের ব্যাপক সমারোহ ঘটেছে। ছোট বড় প্রায় সকল আম গাছ থোকায় থোকায় মুকুলে ছেয়ে গেছে। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই দেখা মিলছে আম গাছ গুলো হলুদ রঙের মুকুলে ভরা।
যা সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। মৌ-মৌ গন্ধে সুবাসিত চারপাশ। মৌমাছিসহ নানা পতঙ্গও বিমোহিত সেই ঘ্রাণে। ইতোমধ্যে অনেক গাছে আমের মুকুল গুটিতে পরিণত হয়েছে।
গত বছরের তুলনায় এবারে দ্বিগুণ মুকুল হওয়ায় বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে আম বাগানের মালিকেরা। তারা প্রয়োজনীয় পরিচর্যার পাশাপাশি নানা রকমের প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ আম বাগান মালিকদের পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছে।
দুই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাড়া মহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, আমের মুকুল ধরে রাখার পরিচর্যায় ব্যস্ত বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে তোলা আম বাগান চাষিরা। গাছে গাছে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াও সময় মত পানি দেয়ায় সচেষ্ট তারা। তাছাড়া বাসা বাড়িতেও আমের ভালো ফলন পেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন অনেকে।
গতবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি মুকুল ধরেছে প্রতিটি আম গাছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন সকলেই। কোন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ঝড়ের কবলে না পড়লে এই আশা পূরণ হবে সবার। তবে স¤প্রতি বৃষ্টি না হওয়ায় ও মঙ্গলবার থেকে ফাল্গুনী হাওয়া বয়ে যাওয়ায় কিছু কিছু মুকুল ইতোমধ্যে ঝরে গেছে।
সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী এলাকার আম বাগানের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নানা জাতের প্রায় দুই হাজার আম গাছ রয়েছে তার ৫ টি বাগানে। এর মধ্যে কোন বাগান শুধু একই জাত, আবার কোনটিতে মিশ্র জাতের গাছ লাগিয়েছেন। প্রতি বছরই ভালো উৎপাদন হয়। তবে এবার মুকুলের ব্যাপক সমাহার দেখে মনে হচ্ছে বাম্পার ফলন হবে।
খাতামধুপুর ইউনিয়নের মোহাইমিনুল ইসলাম ঝন্টু বলেন, যে হারে মুকুল এসেছে তা যদি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে তাহলে আমের ফলনে এবার রেকর্ড হবে। বাগান সহ বাড়ির আশপাশে সর্বত্র সব গাছেই প্রচুর মুকুল। কোন গাছই ফাঁকা নাই। অনেকগুলোতে মুকুলের এত উপস্থিতি যে পাতাই দেখা যাচ্ছেনা। এখন প্রকৃতি সহায় থাকলে আশানুরূপ আম পাওয়া যাবে।
কামারপুকুর ইউনিয়নের জয়নাল আবেদীন বলেন, বাড়ির দুটি আম গাছে এবার বিপুল পরিমাণে মুকুল দেখে মন ভরে গেছে। তাই গাছে পানি দেওয়াসহ কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে মুকুলে ওষুধ স্প্রে করেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট না হলে বাড়ির আম দিয়েই পরিবারের চাহিদা মিটবে। বাজার থেকে কিনতে হবেনা বলে আশা করছি। যা কখনো হয়নি। তবে এবার সেরকমই আশা করছেন সবাই।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের মোশারফ হোসেন, বকুল, মিঠু, বাহাদুর নামে কয়েকজন আম বাগানী জানান, তাদের বাগানে প্রায় বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উন্নত জাতের সুস্বাদু আম যেমন ল্যাংড়া, মিস্ত্রি ভোগ, গোপাল ভোগ, সূর্যপুরি, ফজলি আমসহ আরো একাধিক আম গাছ। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক‚লে আছে। যদি কোন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়ে তাহলে এবারে আমের বাম্পার ফলন পাবেন বলে আশাবাদী তাঁরা।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ধীমান চন্দ্র রায় ও কিশোরগঞ্জের্ লোকমান আলম জানান, আম চাষীদের শোষক পোকা নিধনের সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। যাতে করে আমের মুকুল ধরে রাখা যায় সে বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে তদকারকী করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ভালো ফলনের আশা ব্যক্ত করেন তাঁরা। তবে উপজেলায় কি পরিমাণ আমগাছ আছে এবং ফলন আশানুরূপ হলে তা কি পরিমাণ হবে সে বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারেননি দুই্ কৃষি কর্মকর্তাই।
এইচআর