Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

করিমগঞ্জে রঙিন ফুলকপির বাম্পার ফলন

করিমগঞ্জ (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

করিমগঞ্জ (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

মার্চ ১৪, ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম


করিমগঞ্জে রঙিন ফুলকপির বাম্পার ফলন

ফুলকপির রঙ হলুদ। প্রথম দেখাতে মনে হবে, কেউ সাদা ফুলকপির ওপর রঙ করেছে। আগে এ ধরনের রঙিন ফুলকপির চাষ বাংলাদেশে হতো না। গত কয়েক বছর ধরে শুরু হয়েছে। তবে করিমগঞ্জে এ বছরই প্রথম এই ধরনের ফুলকপির চাষ শুরু হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ সবজি ও ফল উৎপাদন প্রদর্শনীর মাধ্যমে রঙিন ফুলকপির চাষ করা হয়েছে।

এমন হলুদ রঙের রঙিন ফুলকপির চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন করিমগঞ্জ পৌরসভার খুদির জঙ্গল এলাকার তরুণ উদ্যোক্তা মো. সারোয়ার হোসেন।

তরুণ এ উদ্যোক্তা আমার সংবাদকে জানান, করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় পরীক্ষামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করেছেন তিনি। মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় বাজারেও বেশ সাড়া ফেলেছে। কৌতূহলবশত কিনছেন অনেকে, বিক্রিও হচ্ছেন বেশি দামে।

সাধারণ ফুলকপি থেকে এক একটি রঙিন ফুলকপির দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি। আশানুরূপ দাম পাওয়ায় তিনি অত্যন্ত খুশি। প্রথমবারেই আমার সফলতা দেখে এখন অন্য কৃষকরাও উৎসাহ পাচ্ছেন।

উপজেলার পৌরসভা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহজালাল জানান, এ ধরনের সবজি চাষে সফলতায় বড় ভূমিকা রয়েছে মালচিং পদ্ধতি। এক ধরনের বিশেষ মালচিং পেপার ব্যবহারের ফলে রঙিন ফুলকপি চাষে রোগবালাই কম হয়। জৈব উপায়ে এই ফুলকপিতে আসা পোকামাকড় দমন করা যায়। আগাছার প্রাদুর্ভাব নেই, মাটির আর্দ্রতা পরিমিত।

ফলে কৃষককে বাড়তি কোনো সার-কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। তিনি আরও জানান, ফলন ভালো হওয়ায় কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে বিশেষ করে করিমগঞ্জ উপজেলায় রঙিন ফুলকপি চাষের দারুণ সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মুকশেদুল হক জানান, আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদের লাভজনক নতুন প্রযুক্তি সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় রঙিন ফুলকপি চাষে কৃষক সারোয়ার হোসেনকে নির্বাচন করি। তাকে প্রায় ২ হাজার রঙিন ফুলকপির চারা সংগ্রহ করে প্রয়োজন মাফিক সার, কীটনাশক ও মালচিং পেপারসহ কারিগরি সহায়তা প্রদান করি। কৃষি অফিসের নির্দেশনা পালনে তিনি সফল হয়েছেন। আমরা আশা করছি তাকে দেখে আগামী মৌসুমে কৃষক পর্যায়ে এর চাষাবাদ ৩-৪ হেক্টরে সম্প্রসারণ হবে।

রঙিন ফুলকপি চাষে ও পুষ্টিগুণে সাধারণ ফুলকপি থেকে অনেকটা ভিন্ন উল্লেখ করে ওই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, চাষ খরচে রঙিন ফুলকপি অন্যান্য ফুলকপির মতই, তবে রঙিন ফুলকপির বাজার মূল্য সাধারণ ফুলকপির চাইতে প্রায় দ্বিগুণ। আর রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে। প্রাকৃতিকভাবেই বেগুনি ফুলকপি তার রং পায় ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ থেকে। অ্যান্থোসায়ানিন রক্ত জমাট বাঁধা কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। হলুদ ফুলকপির রঙের পেছনে ‘ক্যারোটিনয়েড’-এর ভূমিকা রয়েছে। এতে আছে ভিটামিন ‘এ’ ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ইএইচ

Link copied!