মো. মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর
মার্চ ২১, ২০২৪, ০৩:০৫ পিএম
মো. মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর
মার্চ ২১, ২০২৪, ০৩:০৫ পিএম
‘নাটোরে ‘প্রাণ’ কোম্পানির কারখানার আশেপাশে মানুষের অস্বাভাবিক কান্না থামছেই না। গ্রামের বৃদ্ধ মানুষ বলছে, রাতে তারা ঘুমাতে পারে না, বিকট শব্দে ছোট বাচ্চা পড়তে পারে না। আমের বর্জ্যে ভয়ঙ্কর দুর্গন্ধ। গ্রামের ঘরের দরজায় পঁচা গন্ধ। যেনো প্রাণ হরণ করতে নেমেছে ‘প্রাণ’। ‘প্রাণ’ কোম্পানির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ’-এমন অভিযোগ সাবেক সংসদ মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামানের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় নাটোর শহরের একটি রেস্তরাঁয় সাংবাদ সম্মেলনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান এ অভিযোগ করেন। কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য নলডাঙ্গা উপজেলার হালতিয়া ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাটোরে অবস্থিত ‘প্রাণ’ কারখানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুত্বর অভিযোগ তুলে ধরার পাশাপাশি তা তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রাণ’ কোম্পানি নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে পণ্য উৎপাদন করছে। এছাড়া তারা কারখানার বর্জ্য ভালোভাবে ডিস্পোজ করে না। মেয়াদোত্তীর্ণ বাতিল পণ্যগুলো পুনরায় মোড়ক বদলে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি করে। এছাড়া সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্সে ফাঁকি দেওয়াসহ ক্যাপাসিটির বেশি উৎপাদন করে কাগজে কলমে কম দেখিয়ে অতিরিক্ত পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করে।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রাণ’-র বর্জ্যে মানুষের জীবন ও পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন অন্যদিকে ‘প্রাণ’ কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের প্রাপ্যর চেয়েও কম বেতনে চাকরি করতে বাধ্য করায় অতিষ্ঠ ভুক্তভোগীরা। ‘প্রাণ’-র মতো দেশের প্রথম সারির জাতীয় শিল্প কারখানার কাছে এমন কর্মকাণ্ড প্রত্যাশা করা যায় না।
তিনি আরোও বলেন, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারেন ‘প্রাণ’ কোম্পানির এমন কর্মকাণ্ড থেকে দেশ ও মানুষকে রক্ষা করতে। কারণ ‘প্রাণ’ কোম্পানির ভয়ে তিনি গত তিন বছর নাটোরের নলডাঙ্গায় অবস্থিত তার নিজের হালতিয়া ফার্মে আসতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় তার ১৬০ বিঘা জমি ফিরে পেয়েছেন যেটা ‘প্রাণ’ দখলে নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ কাজ করে না। সবাই শুধু খায় বলেও অভিযোগ করেন সাবেক এই কর্মকর্তা।
আলোচিত এই রাজনীতিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমি ৫০ বিঘা জমি বিক্রির পর আমার ১৬০ বিঘা জমি ‘প্রাণ’ দখল করেছিল। জানের ভয়ে, প্রাণের ভয়ে আমি আমার নিজের জমিতে আসতে পারিনি। পরে সরকারের উচ্চস্তরের সহযোগিতায় আমি আমার জমি ফিরে পেয়েছি। কিন্তু এখনও ‘প্রাণ’ এর কেটে নেওয়া আমার হালতিয়া ফার্মসের ২৯২টি ৩০ বছর বয়সী কাটা গাছ ফেরত পাইনি।
আসলে অভাব থেকে মুক্তি পেতে যে কোন শর্তে ‘প্রাণ’-এ হাজার হাজার মানুষ চাকরি করে। একারণে ‘প্রাণ’-এর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না বলেও সাংবাদিকদের কাছে তিনি ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে ‘প্রাণ’ কোম্পানির এজিএম (জনসংযোগ বিভাগ) তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত পরে জানাবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে ‘প্রাণ’ কোম্পানিতে চাকরিচ্যুত ভুক্তভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
এআরএস