Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

ফটিকছড়িতে ইটভাটা-বাড়ি নির্মাণে গিলে খাচ্ছে ফসলি জমির মাটি

মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

মার্চ ২৭, ২০২৪, ১২:০০ পিএম


ফটিকছড়িতে ইটভাটা-বাড়ি নির্মাণে গিলে খাচ্ছে ফসলি জমির মাটি
ছবি: আমার সংবাদ

ফটিকছড়ি উপজেলায় ফসলি জমির মাটি গিলে খাচ্ছে ইট ভাটা ও বাড়ি নির্মাণে। অবৈধ মুনাফার জন্য এসব কাজে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা। মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও মাটি ব্যবসায়ীদের থামানো যাচ্ছেনা কোনোভাবেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় বেশিরভাগ সময় প্রশাসন মাটি কাটার বিষয় জানার পরও রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করে।

সরেজমিন উপজেলার পাইন্দং, নারায়ণহাট, দাঁতমারা, ভূজপুর, সুন্দরপুর, সুয়াবিল, লেলাং, নানুপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে,  এক্সকেভেটর ও শ্রমিক দিয়ে আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে শতাধিক ড্রাম ট্রাক দিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।

ইটভাটা ছাড়াও ফসলি জমির এসব মাটি ব্যবহার হচ্ছে বসত বাড়ি ও স্থাপনা নির্মাণেও।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির মাটি কাটার ফলে আবাদি জমির উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মাটির জৈব গুণাগুণ। নিচু হয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।

এক শ্রেণির মাটি ব্যবসায়ীরা অভাবী জমির মালিকদের অর্থের লোভে ফেলে কেটে নিচ্ছেন আবাদি জমির মাটি। অবাধে মাটি কাটার ফলে এসব ইউনিয়নের আবাদি জমি নিচু হয়ে গেছে।

সচেতন মহলের ভাষ্য, এভাবে জমির মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে একসময় কৃষিতে বিপর্যয় দেখা দেবে। কমে যাবে আবাদি জমির পরিমাণ। জমি থেকে কেটে নেওয়া মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার জায়গা, সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।

এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে।

জানা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২-এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে।

দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তারপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাতের অন্ধকারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এআরএস

Link copied!