অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
মার্চ ২৯, ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
মার্চ ২৯, ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৪নং কাপ্তাই ইউনিয়ন সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের ব্যঙছড়ি অংশে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির নির্মাণ কাজ থমকে গেছে বনবিভাগের গাছ কর্তনের জটিলতায়। বর্তমানে দ্রুত সময়ে জটিলতা কাটিয়ে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু করা না হলে যেকোনো সময় পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে চট্টগ্রাম এর সাথে কাপ্তাই উপজেলার বিশাল একটি অংশের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেইসাথে ওই জরাজীর্ণ ব্রিজে ঘটতে পারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের (বড়ইছড়ি-কাপ্তাই) অংশের ব্যঙছড়ি ব্রিজটি গত বর্ষা মৌসুমে ভেঙে যায়। এতে চট্টগ্রামের সঙ্গে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র, লগগেইট কাপ্তাইসহ রাঙামাটি আসামবস্তী সড়কের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে সড়ক বিভাগ থেকে যান চলাচলের জন্য অস্থায়ীভাবে বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়। বর্তমানে সেটি বেশ নড়বড়ে এবং ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ নভেম্বর সেই স্থানে নতুন গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৬৪ মিটার এবং প্রস্থ ১০ দশমিক ২০০ মিটার ধরা হয়। দরপত্র পায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ ধরতে গেলে বাধে বিপত্তি। কারণ যেই স্থানে ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে সেখানে কাপ্তাই বনবিভাগের সংরক্ষিত বনের ১২ থেকে ১৪টি সেগুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থাকায় বনবিভাগ সেখানে কাজ করতে বাধা প্রদান করে। এবং সংরক্ষিত বনের গাছ অনুমতি ছাড়া কাটা যাবেনা বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে। এতে থমকে পড়েছে ব্রিজের নির্মাণ কাজ। এছাড়া ব্রিজ নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুরু করতে না পারলে কার্যাদেশ বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নতুন ব্রিজটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বাপ্পী তনচংগা জানান, আমরা ব্রিজের কাজ শুরু করতে গেলে বনবিভাগ গাছ কর্তনে বাধা প্রদান করে। এতে আমরা এখনো কাজ শুরু করতে পারিনি।
এদিকে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে এক্সকেভেটরসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে আসা হয়েছে। অদ্যাবধি কাজ শুরু করতে না পারায় আমাদের দিন দিন লোকসান বাড়ছে। দ্রুত সময়ে কাজটি শুরু করতে না পারলে বিশাল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, বর্তমানে ব্রিজটি খুবই ঝু্ঁকিপূর্ণ অবস্থাতে রয়েছে। দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারলে পুরোনো বেইলি সেতুটি ভেঙে গিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের কাপ্তাই সহকারি বন সংরক্ষক মাসুম আলম জানান, ব্রিজটি যে স্থানে নির্মাণ করা হবে সেখানে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ রয়েছে। আর সংরক্ষিত বনের গাছ কাটার অনুমতি বনবিভাগ দিতে পারেনা। এছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি তবে রাঙামাটি ডিসি অফিসে একটি সভার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হওয়ার কথা রয়েছে।
এআরএস