আমার সংবাদ ডেস্ক:
এপ্রিল ২১, ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক:
এপ্রিল ২১, ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম
বৈশাখের শুরু থেকেই তাপদাহে পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গা। বৃষ্টি না হওয়ায় তাপমাত্রার পারদ প্রতিদিনই ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে। আজ এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। যা অতি তীব্র তাপদাহ।
এদিকে, তীর্যক সূর্যের কড়া রোদের তেজে ঝলসে যাচ্ছে চারদিক। রোদের আগুনে পুড়ে যাচ্ছে গাছপালা ও প্রকৃতি। উত্তপ্ত হয়ে সড়ক-মহাসড়কের পিচ গলে গাড়ির চাকার সাথে উঠে যাচ্ছে। টানা খরতাপে মাঠ-ঘাট ও নদী-পুকুর শুকিয়ে যাচ্ছে। সার্বিক দিক মিলিয়ে এই বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়ছে সব ক্ষেত্রে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত আছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে চলতি মৌসুমের রেকর্ড ভাঙছে।
রোববার দুপুর ১২টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশকিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২০ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৮ শতাংশ।
এর আগে গত শনিবার (২১ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এ জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা অনেকটাই হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, চলতি এপ্রিল মাসে আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই। চলমান এ তাপপ্রবাহ আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।’
এদিকে, টানা তাপদাহের ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের জনপদ। দিন-রাত প্রায় সমানতালে গরম অনুভূত হচ্ছে। এই গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে অনেকে বৈদ্যুতিক ডিপ টিউবওয়েলের পানিতে গোসল করছেন। অনেকে আবার ডাব ও ঠান্ডা লেবুর শরবত পান করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন।
চুয়াডাঙ্গা শহরের কাঁচাবাজারে বাজার-সদাই করতে আসা নাসরিন আক্তার বলেন, ‘এই রোদ-গরমে বাইরে বের হলেই অনেক পানি পিপাসা লাগে। শরীর অনেক ঘেমে যায়। বাজার করতে এসেছিলাম, মনে হচ্ছে শরীর আগুনে ঝলসে যাচ্ছে। তাই লেবুর শরবত খেতে শরবতের দোকানে এসেছি।’
জীবননগর উপজেলার একটি চাতালে ভুট্টা শুকানোর কাজ করছিলেন আমির হোসেন নামের এক দিনমজুর। তিনি জানান, ‘এই কড়া রোদের মধ্যে ভুট্টা শুকাতে এসে মনে হচ্ছে নিজেই শুকিয়ে যাচ্ছি। তাই একটু পরপর হাতে-মুখে পানি দিয়ে নিচ্ছি।’
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে যাওয়ায় রোববার (১৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উচ্চতাপ মাত্রা থেকে পরিবেশ রক্ষায় জেলায় এক লাখ গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়া জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় আগামী ৭ দিন স্কুলকলেজের সাথে জেলার সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
বিআরইউ