Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

বাবাকে দেখতে চাওয়ায় স্বামীর হাতে খুন হলেন স্ত্রী

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম


বাবাকে দেখতে চাওয়ায় স্বামীর হাতে খুন হলেন স্ত্রী

মৃত্যু পথযাত্রী বাবাকে দেখতে বাপের বাড়ি যেতে চাওয়ায় এক পাষণ্ড স্বামীর হাতে লাশ হতে হলো বীথি বেগম (৩৫) নামে দুই সন্তানের জননী গৃহবধূকে।

শেষ পর্যন্ত বাবার বাড়িতে এলেও জীবিত নয় অ্যাম্বুলেন্সের খাটিয়ায় লাশ হয়ে ফিরতে হলো বিথিকে। স্বামী সাখাওয়াত হোসেন শারীরিক নির্যাতন করে মুখে বিষ ঢেলে বিথীকে হত্যা করা হয়েছে বলে গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই স্বামী সাখাওয়াত হোসেন পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় সোমবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিবে বলে মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

গত রোববার বিকালে ওই গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাবার বাড়িতে নিয়ে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

গৃহবধূর বাবার বাড়ি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে একই উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের তামারহাজি গ্রামের নজির শেখের ছেলে সাখাওয়াত হোসেনের সাথে বীথি বেগমের বিয়ে হয়। বিথির বৃদ্ধ বাবা বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু পথযাত্রী। এ খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে বাবাকে দেখতে বাপের বাড়ি আসতে চেয়েছিল সে। সম্পত্তি ও যৌতুক লোভী স্বামী সাখাওয়াত হোসেন এতে বাধা দেয়। এ নিয়ে বীথি বেগম জেদ ধরলে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায় পাষণ্ড স্বামী। এ সময় বীথি বেগমের তলপেটে লাথির আঘাতে শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঘটে জননেন্দ্রিয় দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সে অচেতন হয়ে পড়েন।

এ সময় তাকে মৃত ভেবে স্বামী সাখাওয়াত হোসেন ঘরে থাকা কীটনাশক স্ত্রীর মুখে ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক বীথি বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

গৃহবধূর চাচাতো ভাই সজল শেখ জানান, চাকরির সুবাদে আমি ফরিদপুর থাকি। ছোট ভাই ফোন করে জানায়, বিথিকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে আমি মেডিকেলে ছুটে গিয়ে বিথীর চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কিছু সময়ের মধ্যে আমার বোন জামাইসহ (বিথীর স্বামী) অন্যান্য আত্মীয়রা পালিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং বিষক্রিয়ায় শনিবার রাতে আমার বোনের মৃত্যু হয়। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত গৃহবধূর মা দোলেনা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

হাসপাতালে লাশের সুরতহাল রিপোর্টকারী ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ রানা জানান, মৃতদেহের সুরতহাল শেষে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে। তবে শরীরের জামা কাপড় রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মো শহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ

Link copied!