নাটোর প্রতিনিধি
মে ৪, ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
নাটোর প্রতিনিধি
মে ৪, ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
দেশের বৃহত্তম বিল চলনবিল। এই বিলের কৃষকদের সারাবছরের ধান চালের সংস্থান হয় এই বোরো মৌসুমে। গোটা চলনবিল জুড়েই হয়েছে বোরোর আবাদ। যে কোন মুহূর্তে ঝড় বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তাই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে এই তীব্র তাপদাহের মধ্যেই চলছে বোরো কাটার ধুম।
তবুও বোরোর ফলন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে কৃষকদের মধ্যে। কারণ সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অতিরিক্ত খরায় সেচ দেয়া হয়েছে বেশি। সাথে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কীটনাশকও বেশি পরিমাণ স্প্রে করা হয়েছে। আবার শ্রমিক খরচও বেড়েছে এবার। এতে করে একদিকে যেমন ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে অপরদিকে উৎপাদন খরচও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ৬১ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে চাষাবাদ হয়েছে ৬০ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন।
আর গত মৌসুমে জেলায় ৫৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছিল ৬১ হাজার ২০৪ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ ২ হাজার ৪৯৪ হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছিল। গত মৌসুমে ধান উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন আর চাল উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন।
চলনবিলের কান্তানগর গ্রামের কৃষক মহিদুল, আফসার জানান, তারা মোট ১৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দেয়া লেগেছে বেশি। আবার কীটনাশকও বেশি স্প্রে করতে হয়েছে। অতিরিক্ত খরায় সেচ দেয়ার পরপরই মাটি শুকিয়ে যেতো। গত বছরে তারা বিঘাপ্রতি ধান পেয়ে ছিলেন ২৫ মণ করে। তবে এবার তীব্র তাপদাহের কারণে ফলন কম হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
স্থানীয় অন্যান্য কৃষক জহিরুল, মহির উদ্দীন, কুতুব আলী জানান, এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে সেচের ক্ষেত্রে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সেচ খরচও বেশি পড়েছে। তবে এবার কোনো ধরনের পোকার আক্রমণ দেখা দেয়নি এবং এখনও ফসলের অবস্থাও ভালো। কোনো ঝড় ঝঞ্ঝা না থাকলে তারা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করেন। তবে মাস জুড়ে চলা প্রচণ্ড তাপের কারণে বোরোর ফলন বেশি হওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে কিছুটা আশঙ্কা কাজ করছে।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, তীব্র তাপদাহ চলছে। এটা একটি প্রাকৃতিক ব্যাপার।
তিনি বলেন, জেলার সবখানেই বোরো ধান ভালো হয়েছে। অনেকে কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। এবার বিঘাপ্রতি ২২ থেকে ২৩ মণ হারে ফলন হচ্ছে। তবে প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না ঘটলে বিগত বছরের মতো এবারও বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
ইএইচ