Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪,

কিশোরগঞ্জে কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

মে ১৬, ২০২৪, ০৪:১২ পিএম


কিশোরগঞ্জে কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০২০ সালের ২২ জুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই একের পর এক মনগড়া সিদ্ধান্ত, অদূরদর্শিত, নিয়োগ বাণিজ্য ও নানা অনিয়মের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিভিন্ন মহলে বিতর্কিত।

এসব বিষয়ে ২০২২ সালের ২২ জুন তৎকালীন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বাবু অধ্যক্ষ মো. আল-আমিনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ১২টি অনিয়ম-দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককে আহ্বায়ক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি করেন।

অভিযোগকারী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাবু জানান, নিয়োগ কমিটি গঠন ছাড়াই করোনাকালীন কলেজে ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, নন এমপিওভুক্ত ৫০ জন শিক্ষকের ইনক্রিমেন্ট কর্তন করা হয়েছে। অন্যদিকে কলেজের তৃতীয় শ্রেণির দুজন কর্মচারীকে ৯ মাস ধরে এমফিল/পিএইচডি ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বিধি বহির্ভূতভাবে কলেজের উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বেতন। যোগদানের পর থেকে অধ্যক্ষ ব্যাংকের দ্বৈত সাধারণ হিসাব পরিচালনা করছেন। যাতে আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রশ্নবিদ্ধ বলেও অভিযোগ করা হয়।

এছাড়া অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা না নিয়ে টাকা আত্মসাৎ, ব্যাংকে এফডিআর হিসাবে রাখা ৬৫ লাখ টাকা উত্তোলন, গুরুতর আরেকটি অভিযোগ হলো পে-স্কেল ২০১৫ লঙ্ঘন করে মনগড়া বেতন কাঠামো তৈরি করে বাড়তি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষ কলেজে যোগদানের ছয় মাস পর এমপিওভুক্ত হলেও এমপিওর সরকারি ও কলেজ প্রদত্ত টাকা ছয় মাস আগে থেকেই নিয়েছেন। অপরদিকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে শিক্ষক-কর্মচারীদের কলেজ ফান্ডের চার মাসের বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে না।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আল-আমিন। অবৈধ নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, স্থায়ী কোনো নিয়োগ আমি দেইনি।

এদিকে আবারও এ বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের দৌহিত্র আব্দুল লতিফ খান আরজু দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আব্দুল লতিফ খান আরজুর লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানান, ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের অধ্যক্ষ আল আমিন ও তার সমমনা কিছু শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সদস্যদের যোগসাজশে সিন্ডিকেট তৈরি করে অবৈধভাবে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, সরকারি পে-স্কেল লঙ্ঘন করে মনগড়া বেতন কাঠামো তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎ, উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায়, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা না নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, কলেজের এফডিআরের টাকা উত্তোলনসহ নানা অনৈতিক কাজ করেছে অধ্যক্ষ আল আমিন। এমনকি নিজের অনিয়ম জায়েজ করতে কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদেরও উচ্চশিক্ষার ইনক্রিমেন্ট হিসেবে দিচ্ছেন পিএইচডি ও এমফিল ভাতা। এছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কম্পিউটার চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, প্রজেক্টর ইত্যাদি মালামাল স্টোক বা অকশন প্রক্রিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগ আবারো অস্বীকার করে ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের অধ্যক্ষ আল আমিন বলেন, কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এতে আমি আসার আগে ২১ জন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য নিতে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

ইএইচ

Link copied!