Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

বিএডিসিতে বীজ দিতে অনীহা ঘোড়াঘাটের চাষিদের

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

মে ২৩, ২০২৪, ০২:২৪ পিএম


বিএডিসিতে বীজ দিতে অনীহা ঘোড়াঘাটের চাষিদের

প্রান্তিক পর্যায়ে চুক্তিবদ্ধ চাষিদের মাঝে নানা জাতের ধানের বীজ বিতরণ এবং প্রতি মৌসুমে বীজ সংগ্রহ করে আসছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। তবে নানা ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এবং বৈষম্যতার কারণে কৃষি বীজ উৎপাদন ও বিপণনকারী এই সরকারি প্রতিষ্ঠানে বীজ দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলা উপজেলার চুক্তিবদ্ধ কয়েক শতাধিক চাষি।

সরকারের নানামুখী উদ্যোগে সাধারণ কৃষক যখন ধান উৎপাদন করে তা বাজারে বিক্রি করে ভালো মুনাফা পাচ্ছে, তখন বিএডিসিতে বীজ প্রদানের চুক্তিভুক্ত হয়ে অনেকাংশে লোকসানে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।

এ নিয়ে বুধবার রাতে ঘোড়াঘাট পৌরশহরের বাস টার্মিনালে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ঘোড়াঘাটসহ আশপাশের উপজেলার প্রায় ২০ জন চাষি। তারা সকলে বিএডিসিতে চুক্তিবদ্ধ এবং বগুড়া কন্ট্রাক্ট জোনের অধীনে বছরের পর বছর ধরে তারা ধানসহ অন্যান্য বীজ উৎপাদন করে আসছে। আলোচনা থেকে তারা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে বীজ দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

তাদের দাবি, বিএডিসিতে বীজ দেওয়ার ২ মাসের মধ্যে এক কিস্তিতে পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে, চাষিদের মাঝে বীজ বিতরণের সময় প্রকারভেদে বীজের ক্রয়মূল্য ঘোষণা করতে হবে এবং একর প্রতি ২ টন বীজ বিএডিসিকে নিতে হবে, উৎপাদনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে চাষিদের কাছে বীজ সরবরাহ করতে হবে, বীজ সংগ্রহের পূর্বে পর্যাপ্ত খালি বস্তা সরবরাহ এবং সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে চাষির কাছে থেকে শতভাগ বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হবে।

ঘোড়াঘাট উপজেলার চুক্তিবদ্ধ চাষি সাইফুল রেজা চৌধুরী লেবু বলেন, বিএডিসিতে বীজ দেওয়ার ৫ থেকে ৮ মাস পর কয়েক কিস্তিতে তারা আমাদেরকে টাকা পরিশোধ করে। বাজারে সাধারণ কৃষক যে দামে ধান বিক্রি করে, তার চেয়েও অনেকাংশে কম দামে দিয়ে বিএডিসি আমাদের কাছে থেকে বীজ নিয়ে যায়। কোন কিছু ক্রয় করার আগে সরকার সেটির মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। তবে কেবলমাত্র এই বিএডিসি কোন মূল্য নির্ধারণ ছাড়া আমাদের কাছে থেকে বীজ নিয়ে যায়। তারা তাদের মনগড়া ভাবে আমাদেরকে টাকা দেয়। দিনশেষে দেখা যায় বীজ তৈরিতে আমাদের পরিশ্রম বেশি হচ্ছে এবং উৎপাদন ব্যয়ও বেশি হচ্ছে। তবে আমরা টাকা পাচ্ছি সাধারণ কৃষকের চেয়েও কম।

আরেক চাষি জিন্নাহ সিদ্দিক বলেন, বিএডিসি আমাদেরকে রোপণের জন্য বীজ দিয়ে যায়। আমরা নতুন করে যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ করে বীজ তৈরি করি। আমাদের কাছে থেকে এই বীজ নেওয়ার সময় তারা টালবাহানা শুরু করে। একজন চাষির কাছে যে পরিমাণ বীজ নেওয়ার কথা, তার চেয়ে কম নেয়। এতে করে আমাদের উৎপাদিত ধান বীজ বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বীজ নেওয়ার সময় বস্তা ও গাড়ি ঠিকমতো তারা সরবরাহ করে না। এছাড়াও সাধারণ কৃষকের ধান যেন এক হাত সাইজের হয়। তখন বিএডিসি আমাদেরকে বপনের জন্য বীজ দেয়। তাদের কোনো সিস্টেম আমরা কেউই বুঝতে পারি না।

এ বিষয়ে জানতে বিএডিসি বগুড়া কার্যালয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, বিএডিসি আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ পৃথক একটি দপ্তর। চুক্তিবদ্ধ কোন চাষি যদি আমার কোন অভিযোগ দাখিল করে, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে এখনও পর্যন্ত আমার কাছে মৌখিক কিংবা লিখিত অভিযোগ আসেনি।

ইএইচ

Link copied!