Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪,

বাগাতিপাড়ায় বাড়ছে তালের শাঁসের কদর

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:

মে ৩০, ২০২৪, ১১:৫৭ এএম


বাগাতিপাড়ায় বাড়ছে তালের শাঁসের কদর

একমাত্র ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ, বৈশাখ-জৈষ্ঠ মিলে হয় গ্রীষ্মকাল। এই গ্রীষ্মকালের পুরো বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্যের শুরুর দিকে যেমন কাঁচা আম পাওয়া যায় তেমন জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি থেকে মিলে রসালো পাকা আম, জাম, কাঁঠাল ও লিচু। যে কারণে এই মাসকে মধু মাস বলা হয়। এই মধু মাসে মৌসুমি ফল আম, জাম, কাঁঠাল ও লিচুর পাশাপাশি পাওয়া যায় তালের নরম শাঁস। তালের শাঁস খাওয়ার এখনই সময়।

অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, তখন ফরমালিন ও কীটনাশকের ছোঁয়া ছাড়া তালের শাঁসের কদর বেড়েছে নাটোরের বাগাতিপাড়ায়। তালের নরম শাঁস কে এখানের স্থানীয় ভাষায় ‘তালকুর’ বলা হয়।

উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও পথের মোড়ে এই সুস্বাদু তালকুর বিক্রি করতে এবং ক্রেতাদের কিনে খেতে দেখা যায়। অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তাল গাছ থেকে অপরিপক্ব তাল পাইকারি কিনে এনে কেটে বিক্রি করছেন। নরম অবস্থায় তাল শাঁস বা তালকুর এর দাম বেশি থাকে। এখন একটি কচি তাল ১০ টাকা দামে বিক্রি করছেন তারা।

তবে দিন যতই যাবে তালের শাঁস যতই শক্ত হতে থাকে তখন তার দামও কমতে থাকে। তাই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দাম বেশি পাওয়ার আশায় কচি তাল গাছ থেকে পেড়ে উপজেলার বাজার থেকে শুরু করে গ্রামের বিভিন্ন মোড় এলাকায় তা কেটে বিক্রি করেন।

তালকুর বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরের এই সময়টা তালকুর বিক্রি করে তারা তাদের সংসার চালান। তারা বিশেষ করে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে, সিএনজি অটো ভ্যানস্ট্যান্ড এবং অলিতে গলিতে তালের শাস বিক্রি করেন।

এমনি ভাবে বাগাতিপাড়ার পৌর এলাকার আরিফ ও ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়নের তালকুর বিক্রেতা রমজান আলী জানান, তারা প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করেন। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেড়ে এনে শাঁস বিক্রি করেন। তবে গাছ ওঠে বাঁধা ধরে পাড়া সবচয়েে কষ্টকর। বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসে অধিকাংশ সময়ে তালকুর থাকে গাছে। এই সময়েট মধ্যে ব্যবসায়ীর প্রতদিনি প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ তালের শাঁস বিক্রি করে বলে জানান। একটি শাঁস/তাল আকার ভেদে থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছে। এতে করে তালের সাজ বিক্রি করে সংসার ভালোই চলে।

বাগাতিপাড়া পৌরসভা নাগরিক আব্দুস সালাম জানান, বর্তমানে বাজারে অধিকাংশ ফল ফলাদি ও শাক সবজি সহ মাছ মাংস সব কিছুই কোন না কোন ভাবে ফরমালিন অথবা নানা ধরনের কীটনাশকের মাধ্যমে বাজার জাত করে,কিন্তু  তালের শাঁসে ভেজাল কিছুই থাকে না ১০০% ন্যাচারাল ফল বিধায় বাজারে সব সময় চাহিদা বেশী থাকে, তাছাড়াও ফলটা লোভনীয় হওয়ায় বাজারে এসে আমরা নিজেরা বিক্রেতার নিকট বসে খায় এবং পরিবারের জন্য পার্সেল করে বাসায় নিয়ে যায়।

তালের শাঁসের পুষ্টি গুণ সম্পর্কে  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তালের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি ফল গরমের দিন তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে, এছাড়াও তাতে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি সহ নানান ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে, চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বৃদ্ধি করে।

পরিশেষে বলা যায়, ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ঐ খানেতে বাস করে কানা বগির ছা।’ গাঁয়ের তাল গাছে এখন বকের ছানা থাক বা না থাক, তালগাছগুলাে কিন্তু কচি তালে ভরে গেছে।

বিআরইউ

Link copied!