Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪,

মনোহরগঞ্জে পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করে স্ত্রীকে নির্যাতন

মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

জুন ৩, ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম


মনোহরগঞ্জে পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করে স্ত্রীকে নির্যাতন

তিন কন্যা সন্তানের জনক স্বামীকে অনৈতিক পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্ত্রীর কাছে মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি এবং শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগে সোমবার (৩ জুন ) আদালতে স্বামী ইসমাইল হোসেন সাদ্দাম, শ্বশুর ও শাশুড়ি তাহেরা খাতুনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন আমেনা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামে।

জানা যায় গত ২৮ মে দুপুর দেড়টার দিকে আমেনার কাছে সাদ্দাম হোসেন ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে, টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।

মামলা সূত্রে জানা যায় ১৮ মে ২০১১ সালে হাসনাবাদ গ্রামের সুলতান আহমেদের মেজো মেয়ে আমেনা খাতুনের সাথে পার্শ্ববর্তী মানরা গ্রামের আফাজ উদ্দীনের বড় ছেলে ইসমাইল হোসেন সাদ্দামের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের ফাতেমা আক্তার মিম (১২) সিদরাতুল মুনতাহা (৮), সারিয়া আক্তার (৪) নামে তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

সূত্রে আরো জানা যায়, ইসমাইল হোসেন সাদ্দাম (৩৮) দীর্ঘদিন ধরে একাধিক নারীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরকীয়ার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে সাদ্দামের স্ত্রী আমেনা খাতুন প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ, সময় অসময়ে মারধর করা হতো তাকে। এনিয়ে আমেনা খাতুন তার শ্বশুর আফাজ উদ্দীন, শাশুড়ি তাহেরা বেগমকে জানালে তারা উল্টো আমেনাকে দোষারোপ করে তাদের আরো দুই ছেলে ইয়াসিন ও তারেক মিলে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকে। কয়েকবার মারধর করা হয় তাকে। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও কোনো প্রতিকার হয়নি। সাদ্দাম এবং তার পরিবারের লোকজন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে, দাবি করে মোটা অঙ্কের যৌতুক। আমেনার শাশুড়ি তাহেরা বেগম মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে বলে টাকা না দিলে তারা ছেলে বিয়ে করাবে কেউ আটকাতে পারবেনা। এর আগে একবার আমেনা আক্তার ঘরের সামনে কাজ করা অবস্থায় তার দেবর ইয়াসিন আমেনাকে গালাগালি করতে থাকে, এসময় আমেনা পার্শ্ববর্তী এক মহিলাকে শুনতে বললে ইয়াসিন এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এসময় আমেনার চিৎকার আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ইয়াসিন পালিয়ে যায়। এনিয়ে আমেনা মনোহরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়ে বাড়িতে আসলে তাকে ঘরে ঢুকতে দেয়নি। পরে স্থানীয় মেম্বার আলমগীর হোসেন আমেনা ও তার দুই সন্তানকে তাদের ঘরে আশ্রয় দেয়। পরে এনিয়ে মনোহরগঞ্জ থানায় সালিশের মাধ্যমে সাদ্দামের পরিবারকে সতর্ক করে মীমাংসা করে দেয়া হয়।

এরপর গত ৩০ নভেম্বর আমেনার স্বামী সাদ্দাম হোসেন অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চালানোর একপর্যায়ে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে হত্যাচেষ্টা চালায়। সাদ্দাম নানাভাবে হুমকি দিতো হয় টাকা দিবে না হয় তাকে বিদায় করে দ্বিতীয় বিয়ে করবে। এনিয়ে গত ১৫ এপ্রিল স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান কামাল হোসেন সালিশ করে তাদেরকে শেষবারের মতো সতর্ক করা হয়।

আমেনার এক ভাই জানান, বোনের সুখের জন্য মান সম্মানের ভয়ে চুপ থেকে বিভিন্ন সময় তাকে টাকা পয়সা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আর না এবার আইনের মাধ্যমে তাকে তার অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। গ্রামের লোকজন জানান আফাজ উদ্দীনের পরিবারের সবাই খারাপ প্রকৃতির লোক, মান সম্মানের ভয়ে কেউই কথা বলেনা। তারা বলেন এদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেয়া দরকার।

আরএস

Link copied!