Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

কিশোরগঞ্জে এখনো জমে উঠেনি কোরবানির পশুর হাট

আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ থেকে

আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ থেকে

জুন ৭, ২০২৪, ০৭:৪৫ পিএম


কিশোরগঞ্জে এখনো জমে উঠেনি কোরবানির পশুর হাট

কিশোরগঞ্জে এখনো জমে উঠেনি কোরবানির পশুর হাট। শুক্রবার বিকালে জেলা শহরের চরশোলাকিয়া গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায় গরু ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড়। তবে বেচাকেনা কম।

এবার পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে জেলার ১৩টি উপজেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে প্রায় ১ লাখ ৯৯ হাজার পশু। জেলায় কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩টি গবাদি পশুর। এর মধ্যে ৬৫ হাজার ১০৫টি ষাঁড়, ৩ হাজার ১৭০টি বলদ, ১৬ হাজার ৬০১টি গাভি, ১ হাজার ৪২৯টি মহিষ, ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৮টি ছাগল, ৪ হাজার ৯২৩টি ভেড়া কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রাকৃতিকভাবে প্রস্তুত করা এসব পশু কিনতে গরুর হাটে ও খামারে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন খুচরা ক্রেতাসহ পাইকারেরাও। দেশের অন্যতম পশু উৎপাদনকারী এলাকা কিশোরগঞ্জে গোখাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় এবার লোকসানের আশঙ্কা করে খামারিরা বলছেন, গোখাদ্যের উচ্চমূল্যের প্রভাব পড়বে কোরবানির হাটে।

এদিকে জেলার কোরবানির পশুর হাটে এখনো বেচা-বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়নি। খামারি ও ব্যবসায়ীরা জানান এক বছর ধরে গোখাদ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ভূষি, কাঁচা ঘাস, খড়, খৈল, চিটাগুড়, ধানের কুড়া, খুদসহ সব ধরনের গোখাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।

জেলা শহরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট চরশোলাকিয়া গরুর হাটে শুক্রবার বিকালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গরুর সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম এবং দামও কিছুটা চড়া।

গরুর ব্যাপারীরা জানান, গোখাদ্যের অস্বাভাবিক দামের কারণে এবার খামারিদের গরু পালনের খরচ অনেক বেড়েছে। এ কারণে বেশি দাম চাইছেন তারা। আবার বেশিরভাগ খামারি ও গরু পালনকারীরা কোরবানির সময় দাম আরও বাড়তে পারে এ ধারণা করে হাটে এখনই গরু আনছেন না। ফলে হাটে গরুর আমদানি কম।

সদর উপজেলার জালালপুর গ্রামের খামারি সাজ্জাদ মিয়া জানান, এবার তার খামারে ৩২টি গরু রয়েছে। কিন্তু ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। হাটে কমবেশি ক্রেতা সমাগম থাকলেও আশানুরূপ দাম বলছেন না কেউ। যে হারে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে তাতে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।

করিমগঞ্জ উপজেলার আয়লা গ্রামের ইয়াসিন অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মোশাররফ হোসেন সুমন বলেন, কোরবানির হাটকে সামনে রেখে ১০-১২ টি ষাঁড় প্রস্তুত করেছি। একেকটির ওজন ১০ থেকে ১২ মণ হবে। ভাল দামে এগুলো বেচার আশা আছে।

মৌসুমি পশু ব্যবসায়ীরা জানান, এবার তুলনামূলকভাবে গরুর সংখ্যা বেশি। তবে গোখাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে গরু পালনের খরচ বেড়েছে। এবার কোরবানির পশু নিয়ে লোকসানের ভয়ে আছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে জেলার কোরবানির পশুর হাটে এখনো বেচা-বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়নি। তবে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন পশুর হাটে তুলনামূলক চড়া দামে গরু বিক্রি শুরু হয়েছে। অনেক ব্যাপারী বাড়ি বাড়ি ঘুরে গরু কিনতে শুরু করেছেন। তারা পশুর হাটগুলো থেকেও গরু কিনছেন।

বাড়ি ও খামারে ঘুরে গরু কেনা ব্যবসায়ীরা জানান, বেশি দামে গোখাদ্য কিনে খাওয়ানোর ফলে খামারিরা গরুর দাম বেশি চাচ্ছেন। এতে করে আগে তারা বেশি পশু ক্রয় করলেও এবার কম ক্রয় করতে হচ্ছে। কারণ দাম বেশি হওয়ায় গরুর বাজার আঁচ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে লোকসানের ভয়ও রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত জানান, চাহিদার তুলনায় জেলায় এবার অনেক বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। অতিরিক্ত পশুগুলো দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদাও কিছুটা মেটানো সম্ভব হবে।

পশু পালনে ব্যয় ও দামের ব্যাপারে তিনি বলেন, শুরু থেকেই এবার গোখাদ্যের দাম কিছুটা বেশি। এর ফলে পশু পালনে খামারিদের ব্যয়ও বেড়েছে। সেদিক থেকে ন্যায্যমূল্য না পেলে তারা লোকসানে পড়বেন।

ইএইচ

Link copied!