পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
জুন ১০, ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
জুন ১০, ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক স্কুল শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ভিকটিম পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। ঘটনার চারদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো জ্ঞান ফেরেনি ধর্ষিতা ওই স্কুল ছাত্রীর। একটি প্রভাবশালী পক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের একটি স্কুল থেকে গেলো এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। গত এক বছর ধরে মগনামা ইউনিয়নের বাজার পাড়া এলাকার ছাদেক হোসেনের ছেলে তাওসীফের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমকে চট্টগ্রামের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে কয়েক দফা ধর্ষণ করে তাওসীফ।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমার মেয়ে গত বুধবার সকালে টেইলার্সে কাপড় সেলাইয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। পরেরদিন সকালে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে এক ব্যক্তি আমাকে মোবাইল করে মগনামা কাটাফাঁড়ি ব্রিজ এলাকায় আসতে বলে। সেখান থেকে তার মেয়েকে নিয়ে যেতে বলেন তিনি। এ সময় তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি পরিচয় দেননি। তার কথামতো আমি কাটাফাঁড়ি ব্রিজ এলাকায় এসে ওই নাম্বারে একাধিকবার মোবাইল কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। আমি সেখানে প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করি। তবে বিকালে আমার এক প্রতিবেশী আমির হোসেন আমাকে মেয়েকে পাওয়া গেছে বলে মোবাইল করে পেকুয়া বাজারে আসতে বলে। সেও আর দেখা করেনি। পরে সন্ধ্যার দিকে মেয়েকে পেকুয়া বাজারের পূর্ব পাশে ডিসি রোডের মাথা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে তাকে পরীক্ষা করা হয়েছে।
ভিকটিমের বরাত দিয়ে তার মা আরও বলেন, মেয়ের সাথে মগনামা বাজার পাড়ার ছাদেক হোসানের ছেলে তাওসীফের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এক বছর আগে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে তাকে চট্টগ্রামের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
গত বৃহস্পতিবার ছাদেক হোসেন চট্টগ্রাম থেকে মেয়েকে নিয়ে এসে পেকুয়ায় সড়কে ফেলে রেখে সটকে পড়ে। জানতে পারি প্রতিবেশী আমির হোসেন তাওসীফের বন্ধু। পুরো ঘটনায় আমির হোসেনও জড়িত।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। আজকেও হাসপাতালে ভর্তি করেছি। একটু পরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমি দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোজাম্মেল হক বলেন, ভুক্তভোগী রোগীকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এখন পর্যন্ত শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হবে।
এ ব্যাপারে মগনামা ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকার একটি ছেলে উজানটিয়া এলাকার একটা মেয়েকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করার অভিযোগের কথা শুনেছি। পরে ছেলে পক্ষের অনুরোধে আমরা দুইপক্ষের মানুষজন নিয়ে কয়েকবার বৈঠকে বসেছি। ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা তা সমঝোতার চেষ্টা করতেছি।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, এখনো পর্যন্ত কারও কাছ থেকে আমরা অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইএইচ