Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

মৃত্যুর ৩৬ দিন পর নোয়াখালীতে যুবকের লাশ উত্তোলন

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালী প্রতিনিধি

জুন ১৩, ২০২৪, ০৬:৪০ পিএম


মৃত্যুর ৩৬ দিন পর নোয়াখালীতে যুবকের লাশ উত্তোলন

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যানের কাছে জায়গা বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মৃত্যুর ৩৬ দিন পর মো. আলাউদ্দিন (২৬) নামে এক দিনমজুরের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার ৩নং অভিযুক্ত কবিরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথের উপস্থিতিতে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের বাটইয়া গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়।

এর আগে, গত ১ মে উপজেলার যাদবপুর গ্রামে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যার বাড়িতে যুবককে রাতভর এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।  

নিহত আলাউদ্দিন উপজেলার বাটইয়া গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে।    

জানা যায়, এ ঘটনায় গত ৩ জুন নিহতের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যাকে প্রধান আসামি করে নিশান (২২) ও কবির (৩০) নামে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ৫-৬জনকে আসামি করে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতে নির্দেশে কবিরহাট থানার পুলিশ হত্যা মামলা রুজু করেন।  

নিহতের বাবা মহিন উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের  জায়গা নিয়ে ভাইদের মধ্যে সমস্যা হলে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যার কাছে বিচার প্রার্থনা করি। এরপর তিনি নিজেই জায়গাটি ক্রয় করে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। ওই জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১ মে রাত ৯টার দিকে চেয়ারম্যান সিরাজ আমার ছেলে আলাউদ্দিনকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। এরপর সেখানে নিয়ে পাইপ চুরির অপবাদ দিয়ে  দুই দিন আটকে রেখে তার অনুসারী নিশান ও কবিরসহ তারা আমার ছেলেকে লোহার রড, জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা, হাঁটু, চোখসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে। আমরা অনেক মিনতি করেও তাকে ছাড়িয়ে আনতে পারিনি। পরে কে বা কাহারা গুরুতর আহত অবস্থায় আলাউদ্দিনকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে ৫ মে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ৬ মে ভোর রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ৭ মে তাকে পারিবারিক করস্থানে দাফন করা হয়।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. জাফর উল্যাহ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার এলাকার লোক আমার কাছে কোনো কাজে আসলে আমি সাহায্য করি।  

নরোত্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমার কোন অপরাধ নাই। এক সময় তারা জমি বিক্রি করতে চাইছে আমি ক্রয় করিনি। আমি এক একজন জনপ্রতিনিধি আমার কাজ হচ্ছে মানুষের জানমাল রক্ষা করা। আমি কোনভাবেই এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই। ইনশাআল্লাহ একদিন এটা প্রমাণ হবে।    

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, আমরা আসামি কবিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা তার রিমান্ড চাইবো। সিরাজ চেয়ারম্যান বিষয়ে তিনি বলেন, সে হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছে।

আদালতের নির্দেশে ও মামলার তদন্তের স্বার্থে কবর থেকে ভিকটিমের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএইচ

Link copied!