ফরিদপুর প্রতিনিধি
জুন ২১, ২০২৪, ০৬:০২ পিএম
ফরিদপুর প্রতিনিধি
জুন ২১, ২০২৪, ০৬:০২ পিএম
ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেলের দুর্গম চরে বিষধর রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের কামড়ে একজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ডিক্রিরচর ইউনিয়নে শুক্রবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিনে দুইটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে দুটিকে পিটিয়ে মেরেছে গ্রামবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৮ দাগ এলাকায় রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম হোসেন ব্যাপারি (৫১)। তিনি ওই এলাকার পরেশউল্লা ব্যাপারির ছেলে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার)হেলালউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হোসেন ব্যাপারিকে রাসেলস ভাইপার সাপে কামড়ায়। পরে তাকে ট্রলারযোগে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতি চলছিলো। তার আগেই শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, শুক্রবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান ওই গ্রামের তোতা মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (৪৫)।
কৃষক মুরাদ মোল্লা বলেন, সকালে বাদামের জমিতে কাজ করার সময় সাপটি নজরে পড়ে। এরপর লাঠি এনে তিন চারটি বাড়ি মেরে সাপটি মেরে ফেলি। আগের দিন ওই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে ইউসুফ আরও একটি রাসেল ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে জানান তোতা মোল্লা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন আবু ফকির বলেন, ঘটনা সত্য। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ঘোষিত পুরস্কারের অর্থ প্রদানের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. নিয়াজ জামান সজীব বলেন, গতকাল জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। সভাপতি ঢাকায় অবস্থান করছেন। রাসেলস ভাইপার সাপটি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পুরস্কার পাবেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুঁইয়া জানান, যেকোনো বন্যপ্রাণি নিধন আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাসেলস ভাইপার এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পরে ২০১৪ সাল থেকে আবার সাপটির দেখা যাচ্ছে। পুরস্কারের এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ ধরতে অথবা মারতে গিয়ে যদি সাপের কামড়ে মারা যায়, তবে এ দায় কে নেবে? বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে মারা যাওয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য নয়। সাপের কামড়ের চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অনেক বেশি লোক মারা যান।
ইএইচ