Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় অন্ধকারে ৩০ হাজার মানুষ

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি

জুন ২২, ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম


সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় অন্ধকারে ৩০ হাজার মানুষ

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পদ্মা নদীর ওপারে চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে থাকা একমাত্র সৌর বিদ্যুতের প্লান্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৃহস্পতিবার হঠাৎ এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া এই চরের ১ হাজার ৩০০ গ্রাহক রয়েছে। এতে করে ৩০ হাজার মানুষ অন্ধকার ও দুর্ভোগে পড়েছেন।

প্রায় ৯ বছর আগে সরকারের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) কারিগরি সহযোগিতায় চর আষাঢ়িয়াদহে সৌর বিদ্যুতের প্লান্ট স্থাপন করেছিল বেসরকারি সংস্থা আভা। প্লান্টটির নাম দেওয়া হয়েছিল আভা মিনি-গ্রিড প্রজেক্ট। কোনো ঘোষণা ছাড়াই বৃহস্পতিবার এই গ্রিডটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

চর কানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী চান বলেন, ‘প্রথম দিকে প্লান্ট থেকে ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বছর দুয়েক থেকে শুধু দুপুরে জোহরের নামাজের সময় ১ ঘণ্টা, আসরের নামাজের সময় ৩০ মিনিট, মাগরিবের নামাজের সময় থেকে রাত ১০টা, রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ দেওয়া হতো। এতে কোনোরকমে ফ্রিজটা চলত। বৃহস্পতিবার থেকে একেবারেই বন্ধ। ফ্রিজের ভেতর প্রায় ৫০ কেজি মাংস ছিল। এগুলো বের করে রান্না করা হচ্ছে। খাওয়া যাবে কি না জানি না।’

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) এই প্লান্ট স্থাপনে প্রণোদনাও দেয়। আর কারিগরি সহায়তা করে সরকারের আরেক সংস্থা ইডকল। এই সংস্থাটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সমীক্ষাও করেছিল। প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, প্লান্টটি চালালে প্রতিমাসে ১৫ লাখ টাকা করে লাভ করতে পারবে আভা। কিন্তু এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখা যায়নি। ২৪ ঘণ্টার ভেতর ছয়-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেও প্রতিমাসে প্রায় লাখ টাকা লোকসান হচ্ছিল। সব মিলিয়ে লোকসান হয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

জানা গেছে, আভা মিনি-গ্রিড প্রজেক্টের প্লান্ট ব্যবস্থাপক হিসেবে শুরু থেকেই কর্মরত ছিলেন মিল্লাত হোসেন। এছাড়া আরও দুজন কর্মচারী সেখানে থাকতেন। বৃহস্পতিবার মিল্লাত হোসেন ৪৮ হাজার টাকা বেতনের এই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে প্লান্ট বন্ধ করে চলে আসেন। যোগাযোগ করা হলে মিল্লাত হোসেন বলেন, ‘চাহিদা ১২০ কিলোওয়াটের। আর আমরা সরবরাহ করতে পারছিলাম মাত্র ৬০ কিলোওয়াট। সেই কারণে প্লান্ট বন্ধ করে চলে এসেছি।’

এ ব্যাপারে নেসকোর নির্বাহী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মোহাম্মদ শহিদ হোসেন বলেন, ‘সৌর বিদ্যুৎ স্থায়ী সমাধান নয়। এটি যুগ যুগ চলবেও না। দুর্গম অঞ্চলে বিদ্যুৎ দিতে সরকারের অগ্রাধিকার ছিল বলে নেসকো বিনামূল্যেই আভাকে নানা সহযোগিতা করেছে। কিন্তু নদী পার করে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া সহজ কাজ নয়। আভার সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

ইএইচ

Link copied!