Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

আগুনে পুড়ে ছাই হলো বিধবা হাওয়ানুরের শেষ সম্বল

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৫:০০ পিএম


আগুনে পুড়ে ছাই হলো বিধবা হাওয়ানুরের শেষ সম্বল

বিয়ের কয়েক বছর পরেই মারা যায় হাওয়ানুরের স্বামী জসিম উদ্দিন। ততদিনে তাদের সংসারে জন্ম নেয় ২টি সন্তান। স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ দুটি সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি।

শ্বশুর শাশুড়ির সংসারেও বেশি দিন থাকতে পারেনি হাওয়ানুর। অবশেষে দুই শিশুসন্তান নিয়ে ঠাঁই হয় বাপের ভিটায় ভাইদের সাথে। স্বামীর শোক ভুলে সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিয়ে করেননি। সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য লোকের বাড়িতে এমনকি মাঠে-ঘাটে কাজ করে একটি গরুর বাছুর বর্গা নিয়ে লালন পালন করতে থাকেন। কঠোর পরিশ্রমের পর তার বর্গা নেওয়া গরুটির কিছু দিনের মধ্যেই বাছুর ছানা হবে। এছাড়াও  চারটি ছাগল, ঘরের টুকিটাকি আসবাব পত্রও করেছেন তিনি।

কিন্তু কে জানতো ১৩ বছর ধরে তিলেতিলে গড়া তার সব সম্বল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউপির গয়েশপুর গ্রামে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে।

আগুন লেগে গোয়ালে থাকা ১টি গরু, ৪টি ছাগলসহ থাকার ঘরের সকল আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হাওয়ানুর কোনমতে তার দুই সন্তানে নিয়ে ঘর থেকে বেরোতে পারলেও শেষ সম্বল বলতে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই রইলো না। তার কান্না দেখে এলাকার সকলেরই চোখ ছলছল করছে। অনেকেই বলছে আল্লাহর এ কেমন বিচার, অসহায় বিধবা এ মহিলার সব সম্বল আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিলো।

বন্যা আক্তার বলেন, ১৩ বছর আগে ননদের স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ভাইদের কাছে থেকে অনেক কষ্ট করে খেয়ে-না খেয়ে দুটো সন্তান মানুষ করাসহ ছাগল গরু পুষেছে। আগুনে ছাগল-গরুসহ ঘরের সকল জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

স্থানীয় মোহর আলী ও জয়নাল আবেদীন বলেন, অসহায় এই বিধবা মহিলা দুটি সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে ছেলেদের ভবিষ্যতের জন্য যা করেছে এক রাতে আগুনে পুড়ে তা শেষ হয়ে গেছে। তবে কীভাবে আগুন ধরেছে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছে না।

তারা আরও বলেন, আগুনে পুড়ে অসহায় হাওয়ানুরের প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হামিদুর রহমান টুটুল বলেন, সকালে খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসি, আমার আসার আগে  চেয়ারম্যান এসে দেখে গেছে এবং তিনি ইউএনও স্যারকে বিষয়টি অবগতি করেছে। আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। আমাদের যতটুকু সম্ভব আমরা চেষ্টা করবো এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই, আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি যদি আমাদের কাছে লিখিত আবেদন করে তাহলে সেই পরিবারকে দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।

ইএইচ

Link copied!