Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

কবুতর চুরির অপবাদে শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম


কবুতর চুরির অপবাদে শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

পিরোজপুরের নাজিরপুরে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে মো. সিয়াম ফকির (১১) বছর বয়সের এক শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার কন্যা লাবনী আক্তার (২৬) নামের দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছেন।

ফিরোজা বেগম উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাঠি গ্রামের মৃত মন্নান মল্লিকের স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্তদের নিজ বাড়িতে।

ভুক্তভোগী সিয়ামের ফুফু কুরছিয়া বেগম জানান, ওইদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি খবর পান তার ভাইপো সিয়ামকে তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী মৃত মন্নান মল্লিকের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার কন্যা লাবনী আক্তার সকাল ৬টার দিকে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখতে পান তার সামনেই অভিযুক্ত মা ও মেয়ে সিয়ামকে গাছের সাথে বেঁধে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা মারধর করছেন। এ সময় তাকেও (ফুফু) তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় পার্শ্ববর্তী উত্তর জয়পুর গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল বেপারী বলেন, ওই শিশুটিকে মারধরের চিৎকার পেয়ে ওই বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন শিশুটিকে একটি সুপারি গাছের সাথে বেঁধে মারধর করা হচ্ছে। এ সময় অভিযুক্ত ফিরোজা বেগম ওই শিশুটিকে মারধর ও ওই প্রত্যক্ষদর্শীকেও মারধর করতে তেড়ে আসেন। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী শিশুটি জানায়, তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়ে মিলে সুপারির গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে বেদম মারধর করে। সে কবুতর চুরি করেনি বললেও তাকে  প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে মারধর করেন।

অভিযুক্ত আটক ওই দুই নারী থানায় বসে বলেন, ওই শিশুটি তাদের ২০টি কবুতর চুরি করেছে। তাকে কোন মারধর করা হয়নি। শুধু বেঁধে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন হাওলাদার বলেন, শিশুটির বাবার সাথে মায়ের সম্পর্ক না থাকায় শিশুটি তার দাদির কাছে থাকে। ওই দিন সকালে অভিযুক্ত মা ও মেয়ে গিয়ে শিশুটিকে তার দাদির কাছ থেকে ধরে নিয়ে আসে। এ সময় শিশুটির দাদি এতে বাঁধা দিলে তাকে ঠেলে কাঁদা মাটিতে ফেলে দেয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার জিনাত তাসনিম বলেন, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে চিকিৎসা চলছে। অবস্থার বেগতিক মনে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কোথাও প্রেরণ করা হবে।

নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ভুক্তভোগীকে গাছের সাথে বাঁধা  অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই শিশুকে মারধরের অভিযোগে মা মেয়েকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মামা অহিদুল শেখ বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

ইএইচ

Link copied!