Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪,

অজানা ১টি বুলেট কেড়ে নিল নাহিদের স্বপ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম


অজানা ১টি বুলেট কেড়ে নিল নাহিদের স্বপ্ন

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার খাজুরিয়া লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুলাল হোসেন(৪৮) কাজের খোঁজে ২০১৮ সালে নারায়নগঞ্জের চিটাগং রোডে আসেন। কাজের সন্ধানে এক সময় কাজ না পেয়ে রিকশা চালানো শুরু করেন।

দুলাল হোসেনের তিন ছেলে। তিন  ছেলের মধ্যে নাদিম পরিবারের বড় সন্তান।  ১৬ বছরের নাদিম হোসেন কাঁচপুরের একটি ক্ষুদ্র পোশাক কারখানায় কাজ করতেন এম্বুডারির । আট  হাজার টাকা বেতন পেয়ে তুলে দিতেন রিকশাচালক বাবা মো. দুলাল হোসেনের কাছে।

নাদিমের মা মরিয়ম খাতুন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন,  শনিবার বিকেল ৫টায় ফ্যাক্টরি বন্ধ হলে বাসায় ফিরছিল নাদিম। পথিমধ্যে চিটাগাং রোডের ডাচবাংলা ভবন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয় আমার ছেলে। পথচারীরা একটা প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানে শুধু রক্তপাত বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়।

পরে, আমরা খোঁজ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে গুলি বের করে নিটোরে পাঠিয়ে দেয় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

নাদিমের বাবা মো. দুলাল হোসেন বলেন, ডাক্তাররা বলে ছেলেকে বাঁচাতে হলে পা কাটতে হবে। প্রথমে আমাদের মানতে কষ্ট হলেও পরে বাধ্য হয়ে অপারেশন করাতে হয়। গত মঙ্গলবার নাদিমের বাম পা কাটতে হয়েছে। ছেলেটা এই বয়সেই সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেলো মানতে পারছি না।

দুলাল হোসেন বলেন, অভাবের তাড়নায় ছেলেকে পড়াতে পারিনি। টানা পোড়েনের সংসারে মাত্র ক্লাস ফোরে উঠেছিলো তখন থেকেই আয় রোজগার করার জন্য বিভিন্ন কাজ শুরু করে নাদিম।

ছেলের শোকে কান্না জড়িত কণ্ঠে নাদিমের বাবা মা আমার সংবাদকে জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আগামী দিনে ঔষধপত্র কেনা এবং নাদিমের চিকিৎসা নিয়ে ভয়ের মধ্যে আছি। নাদিমের বাবা বলেন এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ঠিক সময়ে ডাক্তারের কথামতো ঔষধ কিনতে পারবো কি না সেই পেরেশানি সব সময় এখন তাড়া করছে।

হাজারও স্বপ্ন বুকে নিয়ে কাজ শুরু করা, সচ্ছল হয়ে নিজ গ্রামে পরিবার নিয়ে ফিরে যাওয়া এবং হঠাৎ দুর্ঘটনার শিকার হওয়া  নাদিম হোসেন বলেন, আমার জীবনে এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। পুলিশের গুলিতে আমার এক পায়ের সাথে সাথে আশা ভরসা, স্বপ্নও নাই হয়ে গেছে। ইচ্ছে ছিল কিছু টাকাপয়সা কামাই করে গ্রামে যাবো।

এভাবেই হাসপাতালের বেডে পা হারানো নাদিম হোসেন কেঁদে কেঁদে নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন।

বিআরইউ

Link copied!