Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে নির্যাতন

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৬:১২ পিএম


মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে নির্যাতন

বাগেরহাটের শরনখোলায় মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোরী মেয়ে ও মাকে নির্যাতনের অভিযোগ  উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত কিশোরী লামিয়া ও তার মা বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

শনিবার বিকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত কিশোরী লামিয়া আক্তার বলেন, মা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ওষুধ  কিনতে বাজারে যাওয়ার পথে স্থানীয় মাওলানা আশ্বাপ আলী আমাকে ডেকে তার বাড়ির মধ্যে নেয় এবং মুরগি চুরি করেছি বলে মারধর করে। পরে তারা ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে আসে। তপু বিশ্বাস এসে কোনোকিছু না শুনে প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করে। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পিটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মা আসলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। তপু বিশ্বাস আমার বোরকা ছিড়ে ফেলে, আমার গায়ে হাত দেয়। মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে বলে হুমকি দেয়। মারধর শেষে আমার গলায় ধারালো দা ধরে, আমাকে মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি, বলে স্বীকারোক্তি দেই।

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী আরও বলেন, আমি কখনও মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।

তপুর নির্যাতনের ফলে অসুস্থ হয়ে ওই কিশোরীর মা লাইলি বেগমও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস আমার মেয়েকে মারপিট করছে, ডেকে নিয়ে আমাকেও মারধর করেছে। আলাদা ঘরের মধ্যে বসিয়ে হাত বেঁধে মারধর করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েকে যেভাবে পিটিয়েছে তা কোন মা সহ্য করতে পারে না। আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ধানসাগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস বলেন, স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে বলে আমাকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে অনেক লোকজন ছিল৷ আমি থানার তদন্ত ওসিকে ফোন দিয়েছিলাম।

তিনি বলেছেন, স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করে ফেলতে। ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের সমন্বয়ে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।

বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. পার্শা সানজানা বলেন, নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ

Link copied!