Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

অবশেষে যশোর পিটিআই সুপার আতিয়ারকে সাতক্ষীরায় বদলি

এম এ রহমান, যশোর

এম এ রহমান, যশোর

আগস্ট ২০, ২০২৪, ০৬:৪৬ পিএম


অবশেষে যশোর পিটিআই সুপার আতিয়ারকে সাতক্ষীরায় বদলি

দুর্নীতিবাজ যশোর পিটিআইয়ের বহুল আলোচিত সুপার আতিয়ার রহমানকে অবশেষে  বদলি করা হয়েছে।

স্থানীয় দৈনিকে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাকে সাতক্ষীরায় বদলি করেছে মন্ত্রণালয়।

যদিও এর আগে এক দফায় সাতক্ষীরায় চাকরি করেন তিনি। সেখান থেকেও অসম্মানজনক অবস্থায় বিদায় নিতে হয় আতিয়ার রহমানকে। আবারও সেই সাতক্ষীরায় বদলি করায় সেখানকার শিক্ষকদের মধ্যে ফের হতাশা কাজ করছে।

শিক্ষকদের বক্তব্য, অপরাধ করার পর কেবলমাত্র বদলি করে সবকিছু শেষ করা হচ্ছে। ফলে, নতুন কর্মস্থলে গিয়ে একই কাজ করছেন আতিয়ার রহমান।

যশোর পিটিআই সুপার আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে বেশকিছু দিন ধরে নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এটি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চাননি।

সর্বশেষ, বিটিপিটি প্রশিক্ষণের তিন ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীরা তার দুর্নীতি আর অনৈতিক কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারেননি। তারা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন। যা নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, যশোর পিটিআইতে যোগদানের পর মাত্র চার বছরের মধ্যে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন সুপার আতিয়ার রহমান। কিনেছেন প্রাইভেটকার, জমি ও ফ্ল্যাট।

পিটিআই সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তার মতো এতবড় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হাজারে মেলা ভার। সুপার আতিয়ার রহমান যশোর বিমানবন্দর লাগোয়া ভেকুটিয়া কলোনির মোড়ে সাড়ে ছয় শতক জমি কিনেছেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিনি কুষ্টিয়া শহরে ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

কেবল তাই না, তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের চাপ দিয়ে সোনালী নামে একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে ইন্স্যুরেন্স করাতে বাধ্য করেন। বিনিময়ে কমিশন গ্রহণ করেন তিনি।

এদিকে, আতিয়ার রহমানের দুর্নীতি তদন্তে গঠিত দু’সদস্যের উচ্চপর্যায়ের টিম গত বুধবার যশোরে এসে তদন্ত করে। ওই টিমে ছিলেন উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) আব্দুল আলিম ও সহকারী পরিচালক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক।

তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, পোশাক বাণিজ্য, নারী প্রশিক্ষণার্থীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়া, তার কথা না শুনলে চাকরিচ্যূতি কিংবা বিভাগীয় মামলার ভয় দেখানো, প্রশিক্ষণ শেষ না করলে সম্পূর্ণ সম্মানী কেটে রাখা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসলে তাদের আপ্যায়ন খরচ প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে নেয়া, প্রশিক্ষণার্থীদের টাকায় মাঠের ঘাস পরিষ্কার করানো, ক্লাস রুমে ফ্যান কেনা, টাকা দেয়ার পরিবর্তে নিজেই খাবার সরবরাহ করা অন্যতম।

এসব অভিযোগ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ১৮ আগস্ট তাকে বদলি করা হয়েছে সাতক্ষীরা পিটিআইতে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে বদলি করা হয়েছে। যশোরে আপাতত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত সুপার সুবোধ কুমার রায়কে। তাকে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সুপার আতিয়ার রহমানকে বদলির ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যশোরে প্রাথমিকের শিক্ষকরা। তারা বলছেন, প্রশিক্ষণার্থীরা আগামী দিনে কিছুটা হলেও চাপমুক্ত হবেন। রেহাই পাবেন তার অত্যাচার থেকে। কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যশোর সদর উপজেলার সাবেক ইন্সট্রাক্টর সাইদুল হকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলেন প্রশিক্ষণার্থীরা।

আতিয়ার রহমানের বদলিতে যশোরের শিক্ষকরা খুশি হলেও নাখোশ হয়েছেন সাতক্ষীরার শিক্ষকরা। তারা বলছেন, আতিয়ার রহমানের কর্মকাণ্ড সাতক্ষীরার শিক্ষকদের ভাল করেও জানা আছে।

ইএইচ

Link copied!