Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪,

রংপুর সেন্ট্রাল হসপিটাল

পায়ের অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর মৃত্যু: ভুল চিকিৎসা দাবি পরিবারের

রংপুর ব্যুরো

রংপুর ব্যুরো

আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম


পায়ের অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর মৃত্যু: ভুল চিকিৎসা দাবি পরিবারের

রংপুর নগরীর মেডিকেল মোড়স্থ সেন্ট্রাল হসপিটালে পায়ের অপারেশনের পর মুশফিকুর রহমান ওরফে রাসেল (৬০) নামের এক ব্যক্তির মৃত হয়েছে। ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের।

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ছোট মির্জাপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মুশফিকুর ওরফে রাসেল।

শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকাল সোয়া ৪টায় অপারেশনের পর রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

পায়ের এতো ছোট অপারেশনে রোগীর মৃত্যুর জন্য সরকারের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা ও চিকিৎসকদের রেসপন্সিবিলিটি না থাকাকেই দায়ী করেছেন বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রংপুর বিভাগীয় ও জেলা শাখার সভাপতি ডা. অধ্যাপক মামুনুর রহমান।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৪ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় বিকালে পায়ে গুরুতর আঘাত পান মুশফিকুর ওরফে রাসেল। রাতেই রংপুর নগরীর গুডহেলথ হসপিটালে অর্থোপেডিকস ডাক্তার শফিকুল ইসলামকে দেখানোর পর অপারেশন করার পরামর্শ দেন।

পরে নিহত পরিবারের পূর্বপরিচিত অ্যানেস্থেশিয়া ডা. সদরুল ইসলাম সেলিম বৃহস্পতিবার রংপুর নগরীর মেডিকেলমোরস্থ আশা হসপিটালে ভর্তি করান। ভর্তি করার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, অপারেশনের জন্য যে সিআরএম মেশিন থাকা দরকার সেটি আশা হসপিটালে নেই।  

পরে অ্যানেস্থেশিয়া ডা. সদরুল ইসলাম সেলিম রোগীর পরিবারের সদস্যদেরকে বলেন, তাকে সেন্ট্রাল হসপিটালে অপারেশন করতে হবে। ডাক্তার সদরুল ইসলাম সেলিম আশা হসপিটাল থেকে রোগী রাসেলকে সেন্ট্রাল হসপিটালে অপারেশনের জন্য ভর্তি করান। অপারেশন করার জন্য রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা নিজের পছন্দমতো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করান ডা. সদরুল ইসলাম সেলিম। নিহত রাসেলের পরিবারের সাথে অ্যানেস্থেশিয়া ডা. সদরুল ইসলাম সেলিমের পূর্ব পরিচিত থাকায় তার প্রতি অ ঘাত বিশ্বাস ছিল বলে জানান নিহত রাসেলের বড় ছেলে রাফিসহ পরিবারের সদস্যরা। সেই বিশ্বাসে কোন বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসককে  দিয়ে অপারেশন করালে ভালো হবে সে দায়িত্বও  দেওয়া ছিল ডা. সদরুল ইসলাম সেলিমকে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ডা. সদরুল ইসলাম সেলিম রমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ.বি. এম মোর্শেদ গণিকে দিয়ে অপারেশন করান। বিকাল সাড়ে ৪টায় অপারেশন হলে রাত ১১টায় তার মৃত্যু হয়।

নিহতের বড় ছেলে রাফি বলেন, অপারেশনের পর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ বুঝতে পেরে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল হসপিটাল ও  রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল হসপিটালে নিতে চাইলেও আমাদেরকে তা করতে দেয়নি সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে এমন মৃত্যুর জন্য চিকিৎসা পেশাটাকে ব্যবসায়ী দৃষ্টিভঙ্গিতে নেওয়া ও প্রাইভেট হসপিটালে রোগীদের প্রতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের  রেসপন্সিবিলিটি  না থাকায় এরকম মৃত্যু হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রংপুর বিভাগীয় ও জেলা শাখার সভাপতি ডা. অধ্যাপক মামুনুর রহমান।  

তিনি বলেন, একজন চিকিৎসকের প্রাইভেট হসপিটালে যেরকম রোগীদের প্রতি দায়িত্ব থাকা দরকার,  তারা সেটা করেন না।  সরকারি হাসপাতালে চাকরি করার পরেও অতি মুনাফার জন্য বিভিন্ন প্রাইভেট হসপিটালে তারা দৌড়ঝাঁপ করে থাকেন। যার কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটছে।

এ বিষয় নিয়ে রংপুর মেডিক্যালের অর্থোপেডিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ.বি.এম মোর্শেদ গণির সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার কল হলেও রিসিভ করেননি বা পরবর্তী সময়ে কল ব্যাক করেননি তিনি।

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, মৃত্যু অবধারিত, কিন্তু কারো দায়িত্ব অবহেলার কারণে সেটি হচ্ছে কি-না সিটি দেখা দরকার।

ইএইচ

Link copied!