Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪,

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে বিপাকে রোগীর স্বজন

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪, ০২:৩০ পিএম


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে বিপাকে রোগীর স্বজন

মানিকগঞ্জ ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে বিপাকে পড়েছেন রোকেয়া বেগম (৪০) নামের এক রোগী স্বজনেরা।

রোকেয়া বর্তমানে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত ‘লং লাইফ হাসপাতালে’ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

রোকেয়া বেগমের ছেলে রিয়াদ হোসেন জানান, ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে তার মায়ের দু’পায়ে কোন শক্তি পাচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার মা এখন পঙ্গুত্বের দ্বারপ্রান্তে অন্যদিকে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৫ জুলাই ইউনাইটেড হাসপাতালে রোকেয়া বেগমের স্পাইন (মেরুদণ্ড) অপারেশন করা হয়। অপারেশন করেন ঢাকার ‘লং লাইফ হাসপাতালের’ চিকিৎসক ফয়সাল আমিন। অপারেশনের কয়েকদিন পর ইনফেকশন হলে ইউনাইটেড হাসপাতালের পরিচালক আবু রায়হান রাজা রোকেয়া বেগমকে ‘লং লাইফ হাসপাতালে’ পাঠিয়ে দেন। সেখানে রোগীর পরিস্থিতি বিবেচনা করে চিকিৎসক দ্বিতীয় অপারেশন করেন।

চিকিৎসক ফয়সাল আমিন বলেন, অপারেশন করার সময় একটি ড্রেন ব্যবহার করা হয়েছিল। ড্রেনটি এক-দু’দিন পর খুলে দেয়া হয়। তবে ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে আমার সঙ্গে কোন পরামর্শ না বরে কে বা কারা পুনরায় ড্রেন ইন্ট্রুডিউজ করে। দ্বিতীয়বার ড্রেন ব্যবহার করায় ইনফেকশন হয়েছে বলে চিকিৎসক ফয়সাল আমিন নিশ্চিত করেন।

ভুল চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনাইটেড হাসপাতালের পরিচালক আবু রায়হান রাজা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, রোগীর আত্মীয় স্বজনের অসচেতনতার কারণে ইনফেকশন হয়েছে। হাসপাতালে আমরা দুটি বেড দিয়ে এক বেডে রোগী অন্য বেডে রোগীর স্বজনদের থাকতে বলেছি। কিন্তু যখনই রোগীর রুমে গিয়েছি, আমরা দেখেছি কেউ না কেউ রোগীর গলা ধরে শুয়ে আছে।

তবে ডাক্তার ফয়সাল আমিনের বরাত দিয়ে দ্বিতীয়বার ড্রেন ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোগীকে আমরা রিলিজ দিয়েছিলাম। বাসায় নেওয়ার পর ইনফেকশন হয়। রোগীকে ড্রেসিং করানোর জন্য হাসপাতালে আনা হলে এনেস্থেসিস্ট নাসিম ‘বেবি নিডল’ এর চেয়েও ছোট একটি ড্রেন ইন্ট্রুডিউজ করেন। রাজার দাবি, নিজের ভুল ধামাচাপা দিতে ডাক্তার ফয়সাল আমিন এই অভিযোগ করেছেন। রাজার দাবি অনুযায়ী ডাক্তার ফয়সাল আমিনের ভুলে রোগীর ইনফেকশন হয়েছে।

রোকেয়া বেগমের ছেলে রিয়াদ হোসেন জানান, তার মাকে ড্রেসিং করাতে নেওয়া হলে ইউনাইটেড হাসপাতালের পরিচালক রাজা, এনেস্থেসিস্ট নাসিম ও ওটি বয় বিকাশ ড্রেন ব্যবহার করেন। এ সময় তারা একটি পুরাতন ব্লেড ব্যবহার করেন বলেও দাবি করেন রিয়াদ হোসেন।

রিয়াদ বলেন, ৯৪ হাজার টাকা চুক্তিতে তার মাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাদের খরচ হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। এদিকে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে হাসপাতালে যায় সে। তখন হাসপাতালের পরিচালক তাকে লং লাইফ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাতে বলেন। ওই হাসপাতালের সব খরচ তিনি পরিশোধ করবেন জানিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লং লাইফ হাসাপাতালে পাঠিয়ে দেন। ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় অপারেশন করানোর পর বিল করা হয় এক লাখ ১০ হাজার টাকা। তবে সে টাকা দিতে রাজি হচ্ছেন না ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. মকছেদুল মোমিন বলেন, রোগীর ড্রেন ব্যবহার বা যেকোনো ফলোআপের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল। এক্ষেত্রে তারা যদি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডা. মো. মকছেদুল মোমিন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএইচ

Link copied!