মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধি:
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪, ১২:৩৪ পিএম
মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধি:
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪, ১২:৩৪ পিএম
ফ্যাসিস্ট সরকার দীর্ঘ মেয়াদি হওয়ায় দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে মাগুরা জনস্বাস্থ্য অফিস। আওয়ামী ঠিকাদারের একক আধিপত্যে চলে আসছে মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন সরকারি কাজ। আওয়ামী ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া এবং সেই কাজ (সরকারি চাকরিজীবীর কাছে) সাব-কন্ট্রাক্টে ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে জেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের ক্যাশিয়ার মো. ইমামুল এর বিরুদ্ধে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক আলোচিত এই ক্যাশিয়ার মো. ইমামুল। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মাগুরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ইজিপি টেন্ডারের নামে ঠিকাদার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে কাজ পাইয়ে দেয়ার মূলে যে সকল দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার সব কটিতেই সম্পৃক্ত।
১৭ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অফিস থেকে জানা যায়, ইমামুলকে নাইটগার্ড থেকে বর্তমান ক্যাশিয়ার পদে পদোন্নতি দেয়ার পেছনে রয়েছে বিরাট ভূমিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তিনি কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করে নিয়ম বহির্ভূত সকল প্রকার ফাইলের কাজ করে আসছেন। প্রতিদিন রাতে অফিসের মূল ফটকের গেট বন্ধ করে দ্বিতীয় তলা নির্বাহী কর্মকর্তার পাশের রুমে গভীর রাত পর্যন্ত ঠিকাদার দের সাথে আন-অফিসিয়ালি কাজকর্ম এবং বিভিন্ন কাজের পার্সেন্টেজ ভাগ-বটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন।
ইমামুলের সাবেক কর্মস্থল যশোর, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে) জানা যায়, ইজিপি টেন্ডারবাজ ইমামুলের অতীত।
নড়াইল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল থেকে জানা যায়, ইমামুল এর অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় নড়াইল থাকাকালীন নিউজ প্রকাশিত হয় এবং তিনি মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে দফারফা করে নেন।
অনুসন্ধানে জানা যায় সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমানের বিশ্বস্ত কর্মচারী ছিলেন ইমামুল। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানেও প্রধান প্রকৌশলী সাথে রয়েছে বিশাল সুসম্পর্ক। মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে মাগুরা সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় নিরাপদ পানি ও সেনটেশন প্রকল্প,(যার চুক্তি মূল ০১ কোটি টাকার অধিক)। সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্যানিটেশন সরবরাহ প্রকল্প (PEDP-4) সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ একই আওয়ামী ঠিকাদারদের পাইয়ে দেন তিনি। মাগুরা পৌরসভার পানি শোধনাগার নির্মাণেও ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ।
সাব-কন্টাকে সরকারি কর্মচারীদের কাজ করা,পরিচয় গোপন করে সরকারি চাকুরিতে ভয়ংকর জালিয়াতি,বারবার একই আওয়ামী ঠিকাদার কাজ পাওয়া, নিম্ন মানের অল্প কাজে অধিক বিল উত্তোলন এবং কর্মচারীদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতি, ভুয়া বিল-ভাউচার উত্তোলন, সরকারি চাকরিতে ডিসিপ্লিন ভঙ্গ, প্রসঙ্গে মুখ খুলতে রাজি নন ক্যাশিয়ার ইমামুল।
চলমান অনিয়ম দুর্নীতি এবং নাইটগার্ড থেকে বর্তমান ক্যাশিয়ার পদে পদোন্নতি বিষয় জানতে,মাগুরা জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক, তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয় তিনি গণমাধ্যম কর্মীকে তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের পর বিল পরিশোধ হলে তথ্য দেবেন বলে জানান।
তবে এ বিষয়ে নবাগত মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলামকে অবহিত করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আপনারা নিউজে আনেন। বিষয়টি অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নজর দিবেন।
বিআরইউ