Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

অক্টোবরেই উদ্বোধন হচ্ছে বেনাপোলের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল

এম এ রহমান, যশোর

এম এ রহমান, যশোর

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৫:৫১ পিএম


অক্টোবরেই উদ্বোধন হচ্ছে বেনাপোলের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল

দেশের বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে পণ্যজট কমাতে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনশ’ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনালটি আগামী মাসেই (অক্টোবর) চালু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এটি চালু হলে একসঙ্গে এই টার্মিনালে রাখা যাবে ১২ থেকে ১৫শ’ পণ্যবাহী ট্রাক। এর ফলে কমে যাবে ভোগান্তি, বাড়বে বাণিজ্য এবং আয় হবে রাজস্ব।

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৪ একর জমির উপরে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এই কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১০৯ কোটি এবং নির্মাণ কাজ বাবদ ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।

সড়ক ও রেল যোগাযোগ সহজ হওয়ায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সাথে বাণিজ্য বেড়েছে বহুগুণ। তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ে পণ্য পরিবহনে ভোগান্তিও। আর এই সংকট থেকে উত্তরণে এবং স্থলবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেনাপোলে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ- শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক রাশেদুল সজীব নাজির বলেন, জমি অধিগ্রহণপূর্বক এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। এ প্রকল্পের মোট নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৩২৯ কোটি টাকা।

এ টার্মিনালে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ ট্রাক ধারণক্ষমতা  রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় পার্কিং ইয়ার্ড, কার্গো ভবন, বন্দর সেবা ভবন, ইউটিলিটি ভবন, ফায়ার স্টেশন, আধুনিক টয়লেট কমপ্লেক্স, ওয়েব্রিজ স্কেলসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। টার্মিনালটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই টার্মিনালটি চালু করা সম্ভব। এটি চালু হলে বন্দরের দীর্ঘ দিনের যানজট হ্রাস পাবে এবং বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।বেনাপোল স্থলবন্দর কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল প্রকল্পে কাজ করে চারটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হচ্ছে টিবিইএএল।

টার্মিনালের বিষয়ে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, যানজট নিরসনে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণের কাজ ভাল হয়েছে। এখানে যেসব অবকাঠামো বানানো হয়েছে, সেগুলো যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন বলে জানতে পেরেছি। এই টার্মিনাল উদ্বোধন হলে নিশ্চয়ই পণ্যজট কমবে, ভোগান্তি হ্রাস পাবে। সেকারণে আমাদের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। ফলে জায়গা সংকটের অনেক পণ্য রাখা হয় খোলা আকাশের নিচে। এছাড়া ভারতীয় ট্রাকগুলো পণ্য নিয়ে দিনের পর দিন বসে থাকে বন্দরে। জায়গা না থাকায় আনলোড করতে সমস্যা হয়। টার্মিনাল চালু হলে এ সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে বলে মনে করেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বন্দরের পরিসংখ্যান মতে, ২০১১-১২ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ১২ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯৯ টন।

জানতে চাইলে বন্দরের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি নির্মাণে সর্বোচ্চ গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে বুয়েট, কুয়েট এবং আমাদের নিজস্ব ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আর পরবর্তী মাস অর্থাৎ অক্টোবরেই টার্মিনালটি উদ্বোধন হবে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, টার্মিনাল চালু হলে বন্দরের সক্ষমতা ও রাজস্ব আয় দুটোই বাড়বে। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য আরও সহজ করবে।

ইএইচ

Link copied!