Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪,

অভয়নগরে মাছ শিকারের হিড়িক, কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি:

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি:

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০২:২৫ পিএম


অভয়নগরে মাছ শিকারের হিড়িক, কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ
ছবি: আমার সংবাদ

যশোরের অভয়নগরে টানা বৃষ্টিপাতে ছোট-বড় কয়েক শত মাছের ঘের ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া ঘেরগুলো থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ বিভিন্ন নদ-নদী ও সরকারি খালে ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে দেখা যায় এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিকারে নেমেছেন এক শ্রেণির মাছ শিকারি। এতে ঘের মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মাছ শিকারিরা হচ্ছেন লাভবান।

জানা গেছে, জলাবদ্ধতার শিকার উপজেলার চলিশিয়া, পায়রা ও সুন্দলী এই তিন ইউনিয়নের কোটা, চলিশিয়া, বাগদাহ, আন্ধা, বলারাবাদ, বেতভীটা, সরখোলা, ডুমুরতলা, সুন্দলী, ডহর মশিয়াহটী, বাড়েধা, দীঘলিয়া, ভাটাডাঙ্গী, বারান্দিসহ ২৫ গ্রামের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় জীবন যাপন করছে। তবে ভেসে যাওয়া ঘেরের মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

মাছ শিকারি সরখোলা গ্রামের নাসির মোল্যা জানান, ভোরের আলো ফুটতেই জলাবদ্ধ গ্রামের শত শত মাছ শিকারি সরখোলা ও ডুমুরতলা গ্রামে এসে জড়ো হচ্ছেন। তাদের কারও হাতে বড়শি, আবার কারও হাতে থাকছে মাছের খাবার। অনেকে আবার সঙ্গে এনেছেন মাছ রাখার জাল। পরে ভেসে যাওয়া মাছের ঘের সংলগ্ন নদী বা খালের কালভার্টের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে বড়শি ফেলে মাছ শিকার শুরু করা হয়। যা চলে রাত পর্যন্ত।

চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের কামরুল হাসান জানান, গত কদিনে বড়শি ও জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় প্রায় ২৫ কেজি মাছ ধরেছেন। যার মধ্যে রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া, কালবাউশ, পাঙাশসহ দেশি প্রজাতির মাছও রয়েছে। অনেক শিকারি আবার ধরা মাছ বিক্রিও করছেন। যেখানে মাছ শিকার চলছে সেখানে ক্রেতাও চলে আসছেন। ইতোমধ্যে এক শ্রেণির মানুষ বড়শির পরিবর্তে জাল ফেলে মাছ শিকার শুরু করেছেন।

ডুমুরতলা গ্রামের কয়েকজন ঘের মালিক জানান, একটি বিল ধরে তাদের মাছের প্রকল্প ছিল। যেখানে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ দেওয়া হয়েছিল। নতুন পুরাতন মিলিয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিল। গত তিন দিনের টানা বর্ষণে প্রকল্পসহ আশেপাশের সব ঘের ভেসে গেছে। চোখের সামনে প্রকল্পের মাছ শিকার করতে দেখলেও কিছুই করার নেই। বর্তমান সময়ে ঘের মালিকদের সর্বনাশ হলেও শিকারিদের যেন শুরু হয়েছে পৌষ মাস।

অভয়নগর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ১২০ হেক্টর জমির ৩২০টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। আর এই ভেসে যাওয়া মাছ শিকার করতে শিকারিদের যেন এক উৎসব শুরু হয়েছে।

বিআরইউ

Link copied!