Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫,

ফরিদগঞ্জে বিদ্যালয়ের নামে জমি লিজ নিয়ে মাটি বিক্রির অভিযোগ

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০২:৫০ পিএম


ফরিদগঞ্জে বিদ্যালয়ের নামে জমি লিজ নিয়ে মাটি বিক্রির অভিযোগ

বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যে ব্যবহারের জন্য খাস জমি লিজ নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু লিজকৃত জমি থেকে অবৈধ ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিক্রিত অর্থের ক্রিয়দাংশ বিদ্যালয়ের ফান্ডে দিয়ে বাকি অর্থ ভাগবাটোয়ারা হয়েছে।

মাটি কাটার কারণে ওই এলাকায় অর্ধশত পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতার। হুমকির মুখে পড়েছে কয়েক একর ফসলি জমির আবাদ। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আষ্টা মহামায়া সংলগ্ন গুচ্ছ গ্রাম এলাকার ১ একর ৭১ শতক খাস জমি বিদ্যালয় উন্নয়ন কাজে ব্যবহারের জন্য লিজ নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত দেড় বছর পূর্বে হঠাৎ করে ফসলি জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানান, উত্তোলনকৃত মাটি বিক্রি করে টাকা ওই সময়ের বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি বৃহদাংশ নিজেরাই হাতিয়ে নেয়। স্থানীয়রা তাতে বাঁধা দিলে প্রভাবশালী একটি চক্র ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখে। অন্যদিকে ফসলি জমিকে জলাভূমিতে পরিণত করে স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীর ডাক্তার ও মোস্তফা পাটওয়ারী গংদের কাছে সরকারি নিয়মনীতির উপেক্ষা করে মাছের খামারের জন্য ভাড়া দেয়। কিন্তু মাছের খামারের বাঁধের কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ওই এলাকায় কয়েক একর জমিতে কৃষি আবাদ হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক আমিনুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম বেপারীসহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, মাছের খামারের কারণে তাদের কয়েক একর আবাদি জমি স্থায়ী জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। মাটি বিক্রির সময় আমরা বাঁধা দিলে বিদ্যালয়ের কমিটি ও তখনকার ক্ষমতাসীন নেতারা আমাদেরকে মামলার হুমকি দেয়। এবারের বৃষ্টিতে এসব জমিতে গলাসমান পানি ছিল। সরকারি কালভার্ট থাকলেও খামারিদের প্রতিবন্ধকতার কারণে পানি নিষ্কাশন হয়নি।

এছাড়াও গুচ্ছগ্রামের অধিবাসীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে।  

আষ্টা মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের লিজকৃত জমি থেকে তখনকার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার পাটওয়ারী প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাটি বিক্রি করেছে, আমি নিরুপায় ছিলাম।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার পাটওয়ারী বলেন, মাটি বিক্রির বিষয়ে আমি অবগত নই।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান পাটওয়ারী বলেন, বিদ্যালয়ের লিজকৃত জমি থেকে কয়েক লক্ষ টাকার মাটি বিক্রির বিষয়টি আমি নিশ্চিত হয়েছি। তখনকার আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছে, তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এমনটা করেছে। ফসলি জমিকে মাছের খামারে পরিণত করার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল বলেন, খাস জমি থেকে মাটি বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ

Link copied!