ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
অক্টোবর ৬, ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
অক্টোবর ৬, ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম
চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে ঝিনাইদহে প্রাইভেট ক্লিনিকে রিফাত (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আবার সেই রোগীকে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তার স্বজনরা।
শুক্রবার ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের পর তার মৃত্যু ঘটে। রিফাত হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র এবং একই উপজেলার সড়াবাড়িয়া গ্রামের বাদশা মুন্সির ছেলে।
অভিযোগ উঠেছে, মৃত্যুর পরে রিফাতের নিথর দেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ নিয়ে রিফাতের স্বজনরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।
জানা গেছে, অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রিফাত ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক ডা. রেজা সেকেন্দার রিফাতের অপারেশন করেন। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর রোগীর খিঁচুনি শুরু হয় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এদিকে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে মৃত রোগীকে ডা. রেজা সেকেন্দার প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান তিনঘন্টা আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ক্লিনিকের একটি সূত্র জানায়, অজ্ঞানের চিকিৎসক ডা. অপূর্ব রিফাতকে অজ্ঞানের পর তার কার্ডিয়াক ফেল করে এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
রিফাতের পিতা বাদশা মুন্সি শনিবার রাতে জানান, তার ছেলে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তিনি এর বিচার চান।
এলাকার ইউপি মেম্বার আল আমিন জানান, রিফাত এবার এসএসসি পরীক্ষা দিত। কিন্তু অত্যন্ত ভদ্র নম্র এই ছেলেটি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার বলি হয়েছেন।
এ ব্যাপারে চিকিৎসক রেজা সেকেন্দারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা ল্যাবের ম্যানেজার আসিফ মিয়া ও মালিক আশরাফুজ্জামান লিপনসহ সবাই এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, স্কুলছাত্র রিফাতের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর ওই ক্লিনিকটি বন্ধ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমঝোতার ভিত্তিতে ঘটনা মীমাংসা করে ফেলেন। তাই শক্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না। এর আগে একাধিক রোগীর মৃত্যুর পর ডা. রেজা সেকেন্দার নিজেই আর অপারেশন করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি একের পর এক অপারেশন করে যাচ্ছেন।
এর আগে, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কাছেও ডা. রেজা সেকেন্দার আর অপারেশন করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন বলে সিভিল সার্জন জানান।
ইএইচ