Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪,

৪০০ বছরের পুরোনো ‘দুর্গাপুরের মারিয়া মসজিদ’

রাকিবুল হোসেন শাহীন, দুর্গাপুর (রাজশাহী) থেকে

রাকিবুল হোসেন শাহীন, দুর্গাপুর (রাজশাহী) থেকে

অক্টোবর ৬, ২০২৪, ০৭:৪৯ পিএম


৪০০ বছরের পুরোনো ‘দুর্গাপুরের মারিয়া মসজিদ’

৪০০ বছরের পুরোনো এই মসজিদটিকে স্থানীয়রা দুর্গাপুর মসজিদ নামেই চেনে। রাজশাহীর প্রসিদ্ধ কিসমত গ্রামের পাশে মসজিদটি অবস্থিত হওয়ায় এর নামকরণ করা হয় কিসমত মারিয়া মসজিদ।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। এর মধ্যে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মঠ, স্মৃতিস্তম্ভ, দালান কোঠা, বৌদ্ধবিহার, দুর্গ, দুর্গপ্রাচীর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন, প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

এসব প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে মসজিদ এবং মন্দির বিভিন্ন গ্রন্থে বেশি করে আলোচিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন অনেক প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে যেগুলো নিয়ে কোন বইপুস্তুকে বা সেমিনারে এখন অবধি আলোচনা হয়নি। অর্থাৎ মূল্যবান এই স্থাপনাগুলো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।

স্থানীয় জনসাধারণের কাছে যদিও জানা বিষয়গুলো। তবে প্রশাসন কিংবা প্রাচীন স্থাপত্যশিল্প নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন এগুলো এখনো রয়ে গেছে তাদের দৃষ্টিরস্থাপত্যর বাইরে।

এমনি একটি প্রাচীন স্থাপত্য হচ্ছে কিসমত মাড়িয়া মসজিদ। কিসমত মাড়িয়া মসজিদ রাজশাহী শহরের অদূরে দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ। এই মসজিদ টি আনুমানিক ১৫০০ সালে নির্মিত হয়েছিল বলে জানা যায়। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। এই মসজিদটি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত।

রাজশাহী সদর থেকে রাজশাহী-টু ঢাকা মহাসড়ক ধরে ১৩ কিলোমিটার গেলে শিবপুর বাজার হতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড ধরে এগিয়ে ৫-৬ কিলোমিটার গেলে এই মসজিদ টির দেখা মিলবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত হলেও আজ পর্যন্ত এর কোন রক্ষণাবেক্ষণ বা সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমবাগান আর ফসলের ক্ষেতবেষ্টিত এ মসজিদটি সম্পর্কে গ্রামের জনগণের মধ্যে অনেক কিংবদন্তি কাহিনি প্রচলিত আছে।

মারিয়া মসজিদের বিবরণ এ মসজিদ সম্পর্কে সঠিক কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না, তবুও নির্মাণশৈলী দেখে অনুমান করা হয় মসজিদটি আনুমানিক ১৫০০ সালে স্থানীয় কোন মুসলিম দরবেশ বা দিল্লির মুঘল শাসকদের নির্দেশে কোন জমিদার নির্মিত। মসজিদটির ক্ষয়ে যাওয়া দেয়ালে এখনও কিছু শৈল্পিক কর্ম বিদ্যমান। মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে শিল্পীদের কৃত পোড়ামাটির টেরাকোটা যা গাছ-ফুল-লতা ইত্যাদি ধারণ করেছে সেগুলো এ মসজিদের সৌন্দর্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে।

মসজিদটির তিনটি প্রবেশদ্বার আছে। প্রত্যেকটি দ্বারের ঠিক সমান্তরালে উপরে ছাদের মাঝামাঝি একটি করে গম্বুজ আছে।

মসজিদটির সামনে লাগোয়াভাবে ছোট্ট উঁচু উঠান (খোলা বারান্দা) আছে যা অনুচ্চ প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত এবং একটি তিন ধাপী ছোট সিঁড়ি দ্বারা ভূমিতে সংযুক্ত। এর দক্ষিণে একটি দ্বিতল চৌচালা স্থাপনা আছে যা বিবির ঘর বলে পরিচিত। পুরো স্থাপনাটা নির্মিত হয়েছে চুন, সুড়কি ও ইট দিয়ে। দেশের অন্যান্য পুরাতন মসজিদের সাথে এই মসজিদের একটি সাধারণ ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়, তা হল মসজিদটির একেবারে সন্নিকটে কোন বড় জলাধার বা পুকুর-দীঘি নাই।

ইএইচ

Link copied!