Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সংকটে বেহাল লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি

অক্টোবর ১১, ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম


সংকটে বেহাল লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা

নানা সমস্যা আর সংকটে জর্জরিত ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আশানুরূপ সেবা পাচ্ছেন না গ্রামগঞ্জ থেকে আসা দরিদ্র রোগীরা। এতে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ তারা।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট থাকলেও দুই চিকিৎসককে অ্যাটাচমেন্টে অন্যস্থানে দায়িত্ব দিয়ে রাখায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া এখানে এক্সরে, ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাফির মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি থাকলেও সেই সব সেবাও বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারটিও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এখানে চিকিৎসকের সংকট। অথচ ইউএইচএফপিও দুই চিকিৎসককে অ্যাটাচমেন্টে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন। এ জন্য সীমিত সংখ্যক যে কয়জন চিকিৎসক রয়েছেন তারা রোগীদের আন্তরিকতার সঙ্গে সর্বোচ্চ সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে অ্যাটাচমেন্টে থাকা ওই দুই চিকিৎসককে এখানে আনা হলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে স্বয়ং লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার (ইউএইচএফপিও) বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন কর্মকর্তা এবং স্টাফ। তাদের অভিযোগ- বিভিন্ন প্রশিক্ষণের অজুহাতে কর্মস্থলে প্রায় সময় অনুপস্থিত থাকছেন ইউএইচএফপিও ডা. মো. তৈয়বুর রহমান। এমনকি যেদিন অফিসে আসেন, সেদিন আবার দুপুর দেড়টার মধ্যেই কর্মস্থল ত্যাগ করেন তিনি। যার কারণে হিসেবে রয়েছে ভোলায় তার ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা। অথচ তার থাকার কথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি বাসভবনে। তবে তিনি না থাকায় ওই বাসভবনে থাকছেন তার গাড়ি চালক!

অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্টাফের দাবি, লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকাটি চরম অনিরাপদ। এখানের বাউন্ডারির অধিকাংশ স্থানই ভেঙে রয়েছে। যার কারণে রাতের আঁধারে এসব স্থানে দিয়ে জুয়াড়ি এবং মাদকসেবীরা ভেতরে প্রবেশ করে আড্ডা জমায়। এতে করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি কোয়ার্টারে বাস করা চিকিৎসক, নার্স এবং স্টাফরা।

এছাড়াও বর্তমানে বেড়েছে ডেঙ্গু মশার উৎপত্তি। জমে থাকা পানি থেকেই এই মশা জন্মায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতার ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে বিভিন্নস্থানে গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। শিগগিরই ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে এই সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এছাড়া দুই চিকিৎসককে অ্যাটাচমেন্টে দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মানতে আমরা বাধ্য। অন্যদিকে এক্সরে, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি এবং অপারেশন থিয়েটার চালুর ব্যাপারে ইউএইচএফপিও জানান, জনবল সংকটের কারণেই মূলত এসব সেবা বন্ধ রয়েছে। জনবল পদায়নের জন্য বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এখানে জনবল পদায়ন করলেই যেসব সেবা আপাতত বন্ধ রয়েছে তা চালু করা সম্ভব হবে।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাউন্ডারি সংস্কারের বিষয়ে ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাউন্ডারিটি মেরামতের জন্য স্টিমেট পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা মেরামতের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ইএইচ

Link copied!