Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪,

চট্টগ্রামে রুকন সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান

গোটা জাতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার আমরাও বৈষম্যহীন সমাজ চাই

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম ব্যুরো

অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম


গোটা জাতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার আমরাও বৈষম্যহীন সমাজ চাই

গোটা জাতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার জামায়াতে ইসলামীও একটি বৈষম্যহীন সমাজ চাই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। বলেছেন, এখলাসপূর্ণ সহিহ্ নিয়ত নিয়ে আল্লাহর জন্য কাজ করতে হবে। দ্বীন বিজয়ী হবে আল্লাহর সাহায্যের মাধ্যমে। আমাদের বেশি বেশি কোরআন ও হাদিস পাঠ করতে হবে। নবীর জীবনীর সবকিছু মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়।

রবিবার দুপুর আড়াইটায় নগরীর কাজিরদেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক  হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি জননেতা আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান। এতে দারসুল কোরআন পেশ করেন বাইতুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ, ওলামা-মাশায়েখ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ড. অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আবু নোমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কাউকে সন্তুষ্ট করতে কোনো কিছু করা যাবে না। যা কিছু করতে হবে সব হবে আল্লাহর জন্যে। মুমিনের সব কাজ হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। প্রত্যেক সদস্যকে বিচক্ষণতার অধিকারী হতে হবে। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাওয়া যাবে না। দ্বীনের সৌন্দর্য হচ্ছে সবার সাথে সাম্য রক্ষা করা। তবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তিনি হেদায়াতপ্রাপ্ত হন। হেদায়াতপ্রাপ্ত হলে সেই মানুষের জীবন পাল্টে যায়। মুমিনের জন্য পেছনে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। মুমিনদের আল্লাহ যেকোনোভাবে সাহায্য করবেন।

তিনি আরও বলেন, বেশি বেশি আত্মসমালোচনা করতে হবে। আল্লাহর জন্য নিজেকে সোপর্দ করতে হবে। চিন্তা-চেতনা, আমল-আখলাক সবকিছুতে আল্লাহকে হাজির নাজির জানতে হবে। ইনসাফ অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষকে দ্বীনের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। আমরা দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর মজলুম ছিলাম।

জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। বাংলার জমিনে জামায়াতে ইসলামী একমাত্র আল্লাহর দ্বীনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কারো ছোটখাটো বিষয়কে বড় করে দেখা যাবে না। ঘুমানোর আগে অপরকে ক্ষমা করে দিয়ে ঘুমাতে হবে। বিদ্বেষমুক্ত অন্তরের অধিকারী হতে হবে।

চট্টগ্রামকে ইসলামের প্রবেশদ্বার উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামী দিনে আমরা যেন এই চট্টগ্রাম থেকে ইসলামী বিপ্লবের সূচনা করতে পারি প্রত্যেক সদস্যদের ভ‚মিকা পালন করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ফ্যাসিবাদ ও জুলুমের ধারা থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। আর কোন ফ্যাসিবাদকে এই জমিনে মাথা ছাড়া দিতে দেয়া হবে না। ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্রের কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃত্ববৃন্দকে অন্যায়ভাবে হত্যা করছে। যে আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, সেখানে নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে এই দেশের মানুষের মন জয় করেছে। এজন্য আজ বাংলাদেশের মানুষ জামায়াতের নেতৃত্ব দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব না হলে বাংলাদেশের কোন কল্যাণ হবে না। এ জন্য আল্লাহভীরু জীবন গঠনের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে নেতৃত্বদানের জন্য জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের (রুকন) জীবন গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের প্রয়োজনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তৈরি করেছেন। এদেশের মানুষ জামায়াতকে নিরাপদ মনে করে। দেশের খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সকল মানুষ জামায়াতকে দেশ পরিচালনায় দেখতে চায়। ইসলামের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তাই দেশ ও জাতি গঠনে জামায়াত ঐতিহাসিক ভ‚মিকা রাখবে, ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, দ্বীন কায়েমের দায়িত্ব মহান আল্লাহ তা‍‍`আলা মুমিনদের উপর অর্পণ করেছেন। এ ব্যাপারে রুকন ভাইদেরকে সচেতন ও যতœশীল হতে হবে। ময়দানে বলিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য আমাদেরকে ভ‚মিকা পালন করতে হবে। চট্টগ্রামের প্রতিটি মানুষের মাঝে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। আজকের সমগ্র বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আমাদের দিকে চেয়ে রয়েছে। গত ১৮ বছরে দূর্নীতি লুটপাট করে, ভ‚মি দখল থেকে শুরু করে নৈরাজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশকে যে সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে সেই অবস্থান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যে টাকাগুলো পাচার হয়েছে শুধু দুইটা পরিবার থেকে যে টাকা পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে পারলে ৩ বছরের বাজেট হয়ে যাবে। আগামী দিনের বাংলাদেশে ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে একটি সুখী সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়তে রুকন ভাইদেরকে ভ‚মিকা পালন করতে হবে।

আরএস

Link copied!