Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

ফেনীতে দশ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬, আহত ৪৩

ফেনী জেলা প্রতিনিধি:

ফেনী জেলা প্রতিনিধি:

অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০১:১৭ পিএম


ফেনীতে দশ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬, আহত ৪৩

ফেনীতে চলতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ৪৩টি মামলা হয়েছে। সাধারণ ডায়রি হয়েছে ৫টি। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) জেলা পুলিশ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর মধ্যে রয়েছে ফেনী সরকারি কলেজের স্নাতক ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান মাসুদ (২২)। স্বপ্ন পূরণে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পাড়ি জমানোর কথা ছিল প্রবাসে। তবে তার আগেই গত রোববার (২০ অক্টোবর) শহরের খাজুরিয়া রাস্তার মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে তার মৃত্যু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,শুধু মাসুদই নন, এমন আরও অনেক ঘটনার চিত্র দেখা যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ২৬ কিলোমিটার ও ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাসেই এ সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ৪৬ জন। বেপরোয়া গতি, চাঁদাবাজি ও ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের অভাবে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।

জেলার ফাজিলপুর ও মহিপাল হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে,  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফাজিলপুর অংশে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৯টি দুর্ঘটনার তথ্য রেকর্ড করা হয়। এতে ১৮ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। সড়কে বিভিন্ন অপরাধে ১ হাজার ৭২৬টি মামলা দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে ১ হাজার ৭৩৪টি সিএনজি অটোরিকশা।

এছাড়া মহিপাল হাইওয়ে থানার আওতাধীন এলাকায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনায় ১৯টি মামলা করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৭টি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে বেশিরভাগই পথচারী, কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী ও মোটরসাইকেল আরোহী ছিলেন।

এ ব্যাপারে ফাজিলপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, মহাসড়কের এ অংশে পথচারী পারাপার ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। দুর্ঘটনারোধে ডোপটেস্ট ও স্পিড গান ব্যবহার করা হচ্ছে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ফেনী জেলার শহীদুল ইসলাম  বলেন, দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত চালক দায়ী। চালকের যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকা, শিক্ষার অভাব, সড়কে যানচলাচলে ব্যবহৃত চিহ্নগুলো না চেনা দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, আঞ্চলিক সড়কে বেপরোয়া অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা, যাত্রীদের অসচেতনতা ও চালকদের বেপরোয়া গতির মানসিকতায় দুর্ঘটনা বাড়ছে।

দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে করণীয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নিসচার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান দারা বলেন, অস্থায়ী কার্যালয়ে চালকদের তথ্যগত প্রশিক্ষণ নিয়মিত চলছে। চালকদের সঠিকভাবে গড়ে তোলা গেলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমবে। তাদের বলা হয়ে থাকে, পথচারী সচেতন নয়, এটি বিবেচনায় রেখেই সড়কে গাড়ি চালাতে হবে। মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের যথাযথ নজরদারি থাকলে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাসুম সরদার বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধে হাইওয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে। দুর্ঘটনারোধে স্পিডগানের মাধ্যমে গাড়ির গতি পরীক্ষা করা হয়। অতিরিক্ত গতিতে চলাচলকারী গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

একই প্রসঙ্গে মহিপাল হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। জনগণ সচেতন না হলে দুর্ঘটনা রোধ করা অসম্ভব।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর এ দিনটিকে জাতীয়ভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালন করা হয় এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অঙ্গীকার, নিরাপদ সড়ক হোক সবার’।

বিআরইউ

Link copied!