চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম
চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম
যশোরের চৌগাছায় গাড়ল পালন করে লাভবান হয়েছেন কৃষক শরীফুল ইসলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই সফলতা পাওয়া যায় বলে যুবকেরা চাকরির পেছনে না ছুটে গাড়ল পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। তেমনি এই জাতের প্রাণি পালন করে অনেকে লাভবান হয়েছেন।
তার দেখাদেখি অনেকেই গাড়ল পালনের আগ্রহী হচ্ছেন। ফলে ধীরে ধীর বাড়ছে গাড়ল-ভেড়া ও ছাগল পালন।
উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় উদ্যোক্তাদের গাড়ল পালনে আগ্রহ বাড়ছে। এটি ভেড়া বৈশিষ্ট্য একটি জাত। বর্তমানে এই জাতের পশু পালনে লাভের মুখ দেখছেন উদ্যোক্তারা।
শরীফুল ইসলাম উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের খড়িঞ্চা নওদাপাড়া (দানবাক্স) গ্রামের মৃত নওশের আলীর ছেলে।
খামারি শরীফুল ইসলাম চৌগাছা উপজেলার ভারত সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা। তিনি কৃষি গাড়ল খামার নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। গাড়ল ভেড়া জাতীয় একটি প্রাণি। তবে ভেড়া নয়। এর লালন পালনে খরচ অনেক কম এবং লাভ অনেক বেশি।
স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় এর মাংসেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভারতের নাগপুর অঞ্চলের ছোট নাগপুরি জাতের ভেড়ার সঙ্গে আমাদের দেশি ভেড়ার ক্রসব্রিড। এই ক্রসব্রিডের নাম গাড়ল। বর্তমানে তিনি এ গাড়ল পালন করে বছরে লাখ টাকা আয় করছেন চলছে সংসার। ভেড়া থেকে গাড়ল বেশি বড় হয় এবং এর লেজও লম্বা হয়।
উপজেলায় সিংহঝুলী গ্রামের নাসিব-নাকিব সহোদরের নাহার অ্যাগ্রো নামে গাড়লের খামারসহ তিন বছরে ৩-৪টি গাড়লের খামার গড়ে উঠেছে।
খামার মালিক নাসিব খান বলেন, গাড়ল-ভেড়া পালন করে বছরে সকল খরচ-খরচা বাদ দিয়ে ৩/৪ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
তিনি বলেন, একটি বকরি ৩ করে বাচ্চা দেয়। দুই মাস বয়সের বাচ্চা প্রতিটি ৫-৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক গৃহস্থ ও কৃষক এই পশু পালন করছেন। এরা ভেড়ার মতোই নিরীহ ও বোকা। দেখতে ভেড়ার চেয়ে কিছুটা সুন্দর। অনেকটা দুম্বার মতো। এটি ভেড়ার একটি জাত।
খড়িঞ্চা নওদাপাড়া (দানবাক্স) গ্রামের খামারি শরীফুল ইসলাম বলেন, আমি গত ৯ বছর আগে আমার মাত্র ২টি গাড়ল নিয়ে পালন শুরু করি। পরে খামার গড়ে তুলি। আমরা প্রথমে মেহেরপুর জেলা থেকে গাড়ল সংগ্রহ করি। তারপর পালন শুরু করি। এগুলো সব পরিবেশের সাথেই মানিয়ে চলতে পারে। এর পালন খুবই সহজ। এই জাত কোরবানিও দেওয়া যায়। এই প্রাণী সাধারণত কাঁচা ঘাস, গাছের পাতা, বিচুলি, ভূষি, খৈলসহ সব ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। এগুলো স্বভাবে শান্তশিষ্ট হলেও পুরুষ জাতি মেড়া কিছুটা রাগি প্রকৃতির হয়।
আমি ২টি গাড়ল নিয়ে শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমার খামারে ৫০টি গাড়ল রয়েছে। একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ৬-৮ হাজার টাকা। আমার ১ থেকে দেড় হাজার গাড়লের পালন করার পরিকল্পনা রয়েছে। মাদি গাড়ল বিক্রি হয় প্রতিটি ১২-১৩ হাজার টাকায়। আর গর্ভবতী গাড়ল বিক্রি হয় ১৫-১৬ হাজার টাকায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনুয়ারুল করিম বলেন, গাড়ল ভেড়া জাতীয় একটি জাত। বর্তমানে এর পালন ও চাহিদা দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পালন অনেক সহজ ও খরচ অনেক কম হওয়ায় যুবকেরা এর পালনে ঝুঁকছেন। গাড়লের মাংসে কোলেস্টেরল অনেক কম। দিন দিন এর প্রসার বাড়ছে। গাড়ল পালনে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। সব বয়সী মানুষ এর মাংস খেতে পারে।
ইএইচ