ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৬, ২০২৪, ০৪:৫৫ পিএম
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৬, ২০২৪, ০৪:৫৫ পিএম
বাল্যবিয়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে পড়ছে রীমা আক্তার। রীমা যখন দশম শ্রেণির ছাত্রী তখন তার পরিবার তাকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
রীমার ছোট বোন সীমা খাতুনের প্রচেষ্টায় বন্ধ হয় বাল্যবিয়ে। এসএসসি পাস করে ভূরুঙ্গামারী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয় রীমা।
রীমা আক্তার ও সীমা খাতুন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের উত্তর তিলাই গ্রামের কৃষক এনামুল হকের মেয়ে। সংসারের অভাব অনটনের কারণে কিশোরী রীমাকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এনামুল হক।
রীমার বয়স তখন ১৭ বছর। সে উপজেলা শিলখুড়ী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার ছোট বোন সীমা তখন একই বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। বাল্যবিয়ে রীমার জীবন নষ্ট করে দেবে এমন চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে সীমার মনে। পরিবারের সদস্যদের নিকট বাল্যবিয়ের কুফল তুলে ধরে সীমা। তাদেরকে বোঝায় বাল্য বিয়ে একটি অপরাধ। বাল্যবিয়ে দেয়া হলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে, এমনকি জেলেও যেতে হতে পারে।
কিশোরী সীমার প্রচেষ্টা রীমার বিয়ে বন্ধ করে দেয় পরিবার।
বাল্যবিয়ের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে রীমা তার পড়া লেখা চালিয়ে যায়। সে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে ভূরুঙ্গামারী মহিলা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে।
রীমা জানায়, বিয়েতে আমার মত ছিল না। বিয়ের বয়স না হতেই পরিবার বাল্যবিয়ে দিতে চেয়েছিল। ছোট বোনের চেষ্টায় বাল্য বিয়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছি। এসএসসি পাস করে এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছি।
সীমা জানায়, বাল্য বিয়ে ও এর কুফল সম্পর্কে আগে জানতাম না। এমনকি হটলাইন নম্বরে ফোন দিলে সেবা পাওয়া যায় সেটাও জানতাম না। যখন ৭ম শ্রেণিতে পড়ি তখন একদিন আমাদের গ্রামে মহিদেব যুবসমাজ কল্যাণ সমিতির এক আপা (ফিল্ড ফ্যাসিলিটির) আসেন। তার কাছে সেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনের কথা জানতে পারি। সেই যুব সংগঠনে যুক্ত হই। সেখান থেকে বাল্য বিয়ে ও তার কুফল সম্পর্কে জানতে পেরে বড় বোনের বাল্য বিয়ে বন্ধ করি।
রীমা ও সীমার মা রেনুকা বেগম বলেন, অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়াটা আমাদের ভুল ছিল। সীমা আমাকে বোঝায় অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে বিভিন্ন সমস্যা হয়। আমি বিষয়টা বুঝতে পেরে ওদের বাবাকে বোঝালে তিনি বিয়ে বন্ধ করে দেন। মেয়ে এখন কলেজে পড়ছে এতে আমরা খুশি।
কিশোরী সীমা চায় লেখা পড়া করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। আর রীমা চায় পড়াশোনা শেষ করে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে।
ইএইচ