কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের কাসোরারচর গ্রামের কৃষক বাবলু মিয়া। তার স্ত্রী সাদিয়া আক্তার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে চিন্তায় পড়েন।
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য না থাকায় যান কিশোরগঞ্জের মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে নরমাল ডেলিভারিতে তার স্ত্রীর কন্যাসন্তান হয়েছে।
এদিন সকাল ৯টায় তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
কৃষক বাবলু মিয়া জানান, ওই কেন্দ্রে তার বাড়তি খরচ হয়নি। শুধু বাইরে থেকে ২ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়েছে। কিছু ওষুধ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে দিয়েছে। নিরাপদে ও কম খরচে সন্তানের জন্ম হওয়ায় বাবা হিসেবে তিনি খুশি।
কিশোরগঞ্জের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়মিত মেডিকেল অফিসার আছেন মাত্র একজন। উপজেলা পর্যায় থেকে একজন চিকিৎসক সপ্তাহে দুদিন এখানে দায়িত্ব পালন করেন। ভিজিটর আছেন ছয়জন। এই জনবল নিয়েই প্রসূতিদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানালেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী পরিচালক ও জেলা কনসাল্ট্যান্ট ডা. হোসনা বেগম এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. তাসলিমা আক্তার।
জানা গেছে, এ কেন্দ্রে সাধারণত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রসূতিরা আসেন। বিত্তবান পরিবারগুলো প্রসবের কষ্ট এড়াতে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে প্রাইভেট ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার করেন। সেখানে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু দরিদ্র রোগীদের এত টাকাপয়সা নেই। প্রসবের সময় হলেই তারা এখানে আসেন। বেশি জটিল রোগী হলে প্রসূতিকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এই কেন্দ্রে অক্টোবর মাসে ৬৭টি ও নভেম্বরে ৪৯টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। এ দুই মাসে স্থানান্তর করা হয়েছে সাতজন জটিল রোগীকে। প্রসবের পর কোনো জটিলতা না হলে ৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রসূতিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। দক্ষ চিকিৎসক থাকলেও এখানে অচেতনবিদ নেই। অস্ত্রোপচারের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় কেন্দ্রটি।
ডা. তাসলিমা আক্তার জানান, এখানে তিনিই একমাত্র চিকিৎসক। সপ্তাহে দুদিন তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডা. হৃদ্ধ জাহান আসেন। ছয়জন ভিজিটর ডেলিভারির সময় প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, জনবল সংকটের মধ্যেও রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। জনবল চেয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
ডা. হোসনা বেগম জানান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে আমার তত্ত্বাবধানে কিশোরগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গত অক্টোবর মাসে ৬৭টি নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন করেছি। আমরা বিশেষ প্রোয়োজনে সিজার অবশ্যই করি তবে সব সব সময় না।
ইএইচ