Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতাল

৫০ শয্যার বরাদ্দে চলছে ১০০ শয্যার সেবা

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ৮, ২০২৪, ০২:১৯ পিএম


৫০ শয্যার বরাদ্দে চলছে ১০০ শয্যার সেবা

প্রয়োজনীয় ওষুধ ও যন্ত্রপাতির অভাব, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীর স্বল্পতা সেই সাথে ৫০ শয্যার বরাদ্দে জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা।

ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী ও যন্ত্রপাতি এবং ওষুধের স্বল্পতায় গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী হাসপাতালে গুণগত সেবা থেকে প্রতিদিনই বঞ্চিত হচ্ছে কাশিয়ানী ও অলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী।

যন্ত্রপাতির ও টেকনিক্যাল সাপোর্টের অজুহাত দেখিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা এবং একটু জটিল রোগী হলেই চিকিৎসা না দিয়ে অধিকাংশ রোগীদের পাঠানো হয় গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর এবং ঢাকার হাসপাতালে। এ ভোগান্তির শেষ কোথায় কেউ জানে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা সদরে অবস্থিত ৩১ শয্যা ৫০ শয্যার হাসপাতালে রুপান্তর হয়ে অল্প কিছু দিন পরই হাসপাতালটি ২০২০ সালে ১০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত হয়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু করে। আজ পর্যন্ত হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বাড়ানো হয়নি বরাদ্দ। সেই সাথে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি অতিরিক্ত কোন যন্ত্রপাতি।

১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি বরাদ্দ, বাড়েনি ওষুধ সরবরাহ। সেই ৫০ শয্যার বরাদ্দ দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এই হাসপাতালটি। স্বল্প বরাদ্দ দিয়ে দুই উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।

পূর্বের ৫০ শয্যার বরাদ্দ দিয়েই চলছে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে কয়েক দফা আবেদন নিবেদন করেও কোন ফল পায়নি।

কাশিয়ানী ও পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা (আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৪ টি গ্রাম) উপজেলার প্রায় চার লক্ষাধিক লোক চিকিৎসা নিয়ে থাকে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার সীমান্তবর্তী এই হাসপাতালে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অনেক ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ, এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ মেলে না। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক মেলে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন হাসপাতালের চেম্বারে না বসার অভিযোগও রয়েছে। ফলে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আর এই ভোগান্তির শেষ কোথায় কেউ জানেনা।

ওষুধ সরবরাহের ব্যাপারে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর.এম.ও) ডাক্তার আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন আউটডোরে নির্দিষ্ট পরিমাণের ওষুধ ও সেবা দেওয়া হয়। রোগী বেশি হলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। আমরা যেটুকু বরাদ্দ পাই তা দিয়ে এক বছর চালাতে হয়।

হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক রয়েছে মাত্র একজন। একটি এ্যাম্বুলেন্সে ব্যবহৃত হলেও অপরটি হাসপাতালের গ্যারেজে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। প্রয়োজনের সময়ে রোগীরা অ্যাম্বুলেন্স পান না। ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাইরের থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে হচ্ছে।

হাসপাতালটিতে প্যাথলজি, এ্যানালক ও ডিজিটাল এক্সেরে, ইসিজি, রক্ত, মল-মূত্রসহ বিভিন্ন পরীক্ষার যন্ত্রপাতি ও টেকনিশিয়ান থাকালে হাতেগোনা কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা।  

হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম জানান, ১০০ শয্যা উন্নীত হলেও বরাদ্দ রয়ে গেছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের। বরাদ্দ বাড়লে ওষুধের সরবরাহ এবং সুযোগ সুবিধা বাড়বে। ফলে রোগীদের সেবার মান বেড়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে মোট ৫০ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও কর্মরত আছে মাত্র ২১ জন। ২৯ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। ৪৪ জন নার্সের স্থলে কর্মরত আছে ৩৫ জন, ৯ জন নার্সে পদ শূন্য রয়েছে।

ইএইচ

Link copied!