Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

‘মানবাধিকার হরণকারী শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার করতে হবে‍‍’

ফেনী জেলা প্রতিনিধি:

ফেনী জেলা প্রতিনিধি:

ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ০৪:৫১ পিএম


‘মানবাধিকার হরণকারী শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার করতে হবে‍‍’

গত ১৫ বছর দেশে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার বাক স্বাধীনতা হরণের মাধ্যমে গুম-খুম করে দেশকে নরক বানিয়েছিলো। দশ বছর আগে আমার ছেলে মাহবুবুর রহমান রিপন কে রাতের আঁধারে ঘুম থেকে র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়।

আজও তার হদিস মেলেনি। আমার ছেলেসহ গুম হওয়া সকলকে ফিরিয়ে দিতে হবে। গুমকারী ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ মানবাধিকার হরণকারীদের বিচার করতে হবে। দেশে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান সন্তানহারা মা রওশন আরা।

মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ফেনী ইউনিটের আয়োজনে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনী প্রেসক্লাবে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এমন দাবি করেন গুমের শিকার মাহবুবুর রহমান রিপনেরর মা।

‍‍‘মানবাধিকার লঙ্ঘন রুখে দাঁড়াও; অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন কর‍‍’ স্লোগানে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম আবদুর রহিম। অধিকার ফেনীর ফোকাল পার্সন সাংবাদিক নাজমুল হক শামীম‍‍`র সঞ্চালনায় মুলপ্রবন্ধ পাঠ করেন মানবাধিকার সংগঠক শেখ আশিকুন্নবী সজীব।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, ফেনী প্রেসক্লাব‍‍`র সাবেক সভাপতি রবিউল হক রবি, মুহাম্মদ আবু তাহের ভূইয়া, সুজন-সুশাসন এর জন্য নাগরিক এর ফেনী‍‍`র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ফেনী সরকারী কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহম্মেদ আলী, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মহি উদ্দিন খোন্দকার।

বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক আনন্দতারকা সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাপ্তাহিক স্বদেশ পত্র সম্পাদক এন এন জীবন, দৈনিক স্টারলাইন‍‍`র সহযোগী সম্পাদক জসিম মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক কাজি ইকবাল আহমেদ পরান, ক্রীড়া সংগঠক ইমন উল হক, গুমের শিকার রিপনের ভাই মাহফুজুর রহমান শিপু, ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশ‍‍`র ফেনী জেলা সভাপতি শাহজালাল ভূঁইয়া প্রমুখ।

সভায় গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, সাংবাদিক এস এম ইউসুফ আলী, শফি উল্যাহ রিপন, সৈয়দ মনির, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী নসু, সাংস্কৃতিক সংগঠক সৈয়দ মামুন, রাজিব সারওয়ার, ব্যবসায়ী কামরুল জামান মজুমদার, মানবাধিকারের সংগঠক আবদুস সালাম ফরায়েজী, জাফর আহমেদ ভূইয়া, মো. আমিনুল ইসলাম শাহীন, শহিদুল মিশু সহ সাংবাদিক, মানবাধিকার সংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মতবিনিময় সভা শেষে ফেনী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও একটি শোভাযাত্রা বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়।

অধিকার জানায়, কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকার ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত জনগণকে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটায় এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারগুলো কেড়ে নিয়ে দমন-নিপীড়নের পথ বেছে নেয়।

গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপকভাবে রূপ নেয়। জুলাই-অগাস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে হাসিনা সরকার যে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তা ছিল নজিরবিহীন।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য এবং ক্ষমতাসীনদলের নেতা-কর্মীরা এই সময়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছোঁড়ে।

এতে শিশুসহ ১ হাজার ৫৮১ জন নিহত, ১৮ হাজার আহত এবং ৫৫০ জনের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। অধিকার তার মানবাধিকার সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে গিয়েও হাসিনার শাসনামলে চরম রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও হয়রানির সম্মুখীন হয়।

২০২৪ সালের ৫ অাগস্ট বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। সম্প্রতি ভারতীয় শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।

ভারতের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলা চালানো হয়েছে এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা ও নির্যাতন অব্যাহত আছে। অধিকার বাংলাদেশের ওপর ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

অধিকার মনে করে জনগণের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হবে।

বিআরইউ

Link copied!