তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চলনবিল অঞ্চল শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। এখানে কৃষকদের দিনদিন ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
আগ্রহ বাড়ার অন্যতম কারণ ভুট্টার দাম ভালো এবং চাষাবাদে ঝামেলাও কম। আবার ভুট্টা এখন মাছ আর মুরগির খাদ্য নয়, মানুষের অন্যতম প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য।
উন্নত পুষ্টিমানের কারণে গমের আটার বিকল্প হিসেবে ভুট্টার গুঁড়ো দিয়ে বিস্কুট, চানাচুর, কেকসহ নানা ধরনের খাবারও তৈরি করা হচ্ছে।
ভুট্টা সাধারণত বিনা চাষ এই দুই পদ্ধতিতেই আবাদ হয়ে থাকে। খরচ অল্প এবং অন্য ফসলের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় বোরো আবাদের পাশাপাশি অনেক জমিতে এবার ভুট্টা চাষ করছে বিলাঞ্চলের কৃষকরা। তারা এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনাও দেখছেন।
তাড়াশ উপজেলা ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হলেও সকল ইউনিয়নে সমানভাবে ভুট্টার চাষ হয় না। সাধারণত চরাঞ্চলে ভুট্টার চাষ বেশি হয়। কারণ বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি ও বন্যামুক্ত উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। আর এ ধরনের জমিগুলো চরাঞ্চেলেই বেশি। হাইব্রিড জাতের ফলন বেশি হওয়ায় দেশে মোট আবাদের ৯৫ ভাগেই হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়ন, বারুহাস ইউনিয়ন, সগুনা ইউনিয়ন, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন, নওগাঁ ইউনিয়ন মাধাই নগর ইউনিয়ন ও তাড়াশ সদর ইউনিয়নে ভুট্টার আবাদ বেশি হয়েছে। যে সমস্ত জমিতে চাষ ছাড়াই ভুট্টা চাষ করা হয়েছে, সে সকল জমির ভুট্টা গাছ একটু বড় হয়েছে এবং যে সকল জমিতে চাষ করে ভুট্টা লাগানো হয়েছে, সে সমস্ত জমির ভুট্টা গাছ একটু ছোট আছে। ভুট্টা আবাদে তুলনামূলক খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এবং প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ দেখা না দিলে বাম্পার ফলনরে আশা করছেন কৃষকেরা।
সগুনা ইউনিয়নের দিঘী গ্রামের কৃষক হাফিজ উদ্দিন মোল্লা জানান, এ বছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে এবং বিঘাতে ৪০ মনের মতো ফলন হবে বলে আশা করছেন। বাজার দর ভালো থাকলে ভালো লাভ হবে বলে তার প্রত্যাশা।
নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়ার কৃষক মো. আনশব আলী বলেন, মাটিতে জোঁ থাকা অবস্থায় ৩ থেকে ৪টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। জমি সমান করে, সেচ ও পানি নিষ্কাশনের জন্য জমির চার পাশে নালা করতে হয়। জমির দুই পাশে রশি বা সুতো বেঁধে কোঁদাল বা ছোট হাত লাঙলের সাহায্যে এক থেকে দুই ইঞ্চি পরিমাণ মাটি গভীর করে এই লাইন করতে হয়। লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে ৩০ ইঞ্চি। ওই লাইনের মধ্যে ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পরপর একটি করে ভুট্টাবীজ দিয়ে লাইনটি ভালোভাবে ভরাট করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুলাহ আল মামুন জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০০ হেক্টর। তবে সময়ের সাথে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে আশা করছি। রোগ-বালাই দমনে কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলন হবে।
ইএইচ