Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

তাড়াইলে খিরার বাম্পার ফলন

তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ০২:৪৯ পিএম


তাড়াইলে খিরার বাম্পার ফলন

কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে খিরার বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। প্রতিদিন আড়তে বেচাকেনা হচ্ছে কয়েকশ টন খিরা।

হাওরাঞ্চল অধ্যুষিত এ উপজেলার উৎপাদিত এসব খিরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে আড়ত থেকে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় আড়তদাররা।

ভোজনরসিক ও বিয়ে-শাদির খাবারে সালাত হিসেবে খিরার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই প্রতিমণ খিরা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়, যা উৎপাদন খরচের চেয়ে তিন গুণ বেশি।

অল্প সময়ে স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় প্রতি বছরই খিরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন নতুন নতুন কৃষক।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে এবার ২৫৫ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে।

সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি একর জমিতে ভাড়া বাবদ ২৫ হাজার টাকা এবং বপন, সার, কীটনাশক, হাল ও শ্রমিকসহ ৫০-৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বর্তমান বাজারে ১২ থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে খিরা। এ ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ উঠিয়ে লাভের আশা করছেন কৃষকরা।

কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় গত বছর থেকে এ বছরে খিরা চাষ বেড়েছে এ অঞ্চলে। খিরা চাষ করে অনেক কৃষকই এখন স্বাবলম্বী হয়েছে।

কৃষক স্বপন মিয়া, সিদ্দিক মিয়া ও কাজল মিয়া জানান, অন্য ফসলের চেয়ে খিরা চাষে অধিক লাভ হওয়ায় খিরা চাষের প্রতি তাদের আগ্রহ বেড়েছে।

তারা আরও জানান, এক বিঘা জমিতে খিরা চাষ করতে ১১ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর বাজারজাত ও শ্রমিক খরচসহ আরও ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকার মতো প্রতি বিঘায় খিরা চাষ করতে খরচ হয়। পরে প্রতি বিঘা খিরা বিক্রি করতে পারি ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এতে আমাদের ৫০-৭০ হাজার টাকা মতো লাভ থাকবে। এদিকে উপজেলার চারদিকে তাকালে শুধু খিরা আর খিরা ক্ষেত দেখা যায়। নারী পুরুষ ও শিশু খিরা ক্ষেতে কাজে ব্যস্ত। কেউবা খিরা তুলছে, কেউবা বাছাই করছে আবার কেউবা বস্তায় ভরছে।

ক্ষেত থেকে খিরা তুলতে আসা মুক্তা বেগম জানান, খিরা চাষে খরচ কম অধিক লাভ। তাই আমার স্বামী এ বছর খিরা চাষ করে ভালো দাম পাওয়ায় আমরা লাভবান। আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করবো।

খিরা কিনতে আসা পাইকার এনামুল হক ও হৃদয় জানান, এ বছর ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণপ্রতি খিরার দাম ধরা হয়েছে। যাতায়াত ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ প্রতি মন ১১শ থেকে সাড়ে ১১শ টাকা খরচ পড়ে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৩৫ টাকা ধরে বিক্রি করছি। কেজি ৫ টাকা ও মন প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা লাভ হচ্ছে। এ বছর দাম কম হওয়ায় খুচরা বিক্রি বেশি।

তাড়াইল সদর বাজার মাদরাসা মার্কেটের কাঁচাবাজার খিরার হাটের আড়তদারদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এবার খিরার ফলন ভালো হয়েছে। সেই সঙ্গে চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক।

এ প্রসঙ্গে তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার সাহা বলেন, উপ-সহকারী কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। সে সঙ্গে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই মৌসুমে খিরা চাষে কৃষকরা ভালো ফলন ও দাম পাচ্ছেন। আশা করছি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

ইএইচ

Link copied!