Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪,

আ.ন.ম শামসুল ইসলাম

আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিল

চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৬:০৬ পিএম


আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিল

দেশ গড়ার, উন্নয়নের কারিগর ও সুন্দর সুন্দর স্থাপনার কারিগর শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আ.ন.ম শামসুল ইসলাম।

বলেন, শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পায় না।

শনিবার সকাল ৯টায় সাতকানিয়া মডেল হাইস্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে সাতকানিয়া উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাতকানিয়া উপজেলার শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি ডা. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে সহ-সভাপতি দিদারুল আলম ও উপজেলা অর্থ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মুহাম্মদ তসলিম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ জাফর সাদেক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসহাক, কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস.এম লুৎফর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ অহংকার করে বলেছিল পালায় না কিন্তু আল্লাহ এমন পরিস্থিতি তৈরি করে দিয়েছে যে তারা স্বদলবলে পালাতে বাধ্য হয়েছে। গুম, খুনের রাজনীতি, আয়না ঘরের রাজনীতি, হাজার হাজার মামলা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, শ্রমিকদের নির্যাতনের মাধ্যমে একটা ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিল। কোনো যুক্তি, ডকুমেন্টস ছাড়া মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। নতুনভাবে আর কোন জালিম যাতে এদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

তিনি বলেন, নবী রাসুলদের ৯৮ শতাংশ হলো শ্রমজীবী। বিভিন্ন সময়ে বিপ্লবের সাথে জড়িত বেশিরভাগই শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন হলে শ্রমিকরা চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, শিক্ষার অধিকার ফিরে পাবে। ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র, সুবিচারপূর্ণ বিচারব্যবস্থা, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রমিক কল্যাণ কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধান বক্তা লস্কর মুহাম্মদ তসলিম বলেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ইসলামি শ্রমনীতির জন্য কাজ করছে। শ্রমিক কল্যাণের প্রধান কাজ হলো ট্রেড ইউনিয়ন। প্রতিটি সেক্টরে শ্রমিকদেরকে সংগঠিত করে তাদের অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দিতে হবে। শ্রমিকদের প্রয়োজনে আর্থিক সহযোগিতা করা শ্রমিক কল্যাণের কাজ। এই বাংলায় কোন স্বৈরাচার, লীগ পন্থি, জয় বাংলা পন্থীদের স্থান হবে না।

কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা জাফর সাদেক বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা জনগণের টুটি চেপে ধরে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। ছাত্রজনতার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের নির্লজ্জ পতন হয়েছে। টিপাইমুখ বাঁধ, ট্রানজিট এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে জামায়াত নেতৃবৃন্দদেরকে হত্যা করা হয়েছে। পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ কেউই শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি, একমাত্র ইসলামই শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশের সমস্ত দৃশ্যমান উন্নয়ন যেগুলো দেখা যায় তা শ্রমিকদেরই অর্জন। শ্রমিকদের সাথে দূরত্ব কমিয়ে তাদেরকে কাছে টেনে একসাথে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে শামিল হতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ  দুঃশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছিল। ছাত্রজনতা দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। যারা শ্রমিক সমাজের উপর অত্যাচারের স্ট্রিম রোলার চালিয়েছিল জনগণ তাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে যারাই চক্রান্ত করবে তাদেরকেই শ্রমিক জনতা প্রতিহত করবে।

কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসহাক বলেন, সাতকানিয়া নির্যাতিত মজলুম জনতার জনপদ। সাতকানিয়ার প্রতি ইঞ্চি মাটি ছিল কারাগার। পুঁজিবাদীরা শ্রমজীবীদের অধিকার আদায়ের নামে শ্রমিকদের শোষণ করছিল ঠিক তখনই শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিক কল্যাণ যাত্রা শুরু করে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস পালানোর ইতিহাস। শেখ মুজিব ও পাকিস্তানের কাছে পালিয়ে নিরাপদ আত্মসমর্পণ করেছিল।

কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস.এম লুৎফর রহমান বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নির্যাতিত নিপীড়িত অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করছে। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে শতকোটি টাকা লুট করেছে, শ্রমিকদের শোষণ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন চাঁদাবাজের উত্থান হয়েছে। নতুন কোন সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, মাস্তানি, টেন্ডারবাজি করতে দেয়া হবে না। শ্রমিকদেরকে সাথে নিয়ে তাদেরকে শক্তহাতে প্রতিহত করতে হবে। জামায়াতের নামে যদি কেউ চাঁদাবাজি করে তাদেরকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার আহ্বান জানান তিনি।

এতে আরও বক্তব্য দেন- দক্ষিণ জেলার উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, দক্ষিণ জেলা সভাপতি মাওলানা নুরুল হোসাইন, দক্ষিণ জেলা উপদেষ্টা মাওলানা আবুল ফয়েজ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম, সহ-সভাপতি শফিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার এনামুল হক, সাতকানিয়া উপজেলা উপদেষ্টা মাওলানা কামাল উদ্দিন, উপদেষ্টা মুহাম্মদ তারেক হোসাইন, উপদেষ্টা হামিদ উদ্দিন আজাদ, উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আরিফুল হক প্রমুখ।

ইএইচ

Link copied!