Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫,

কুমিল্লায় মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: ৭৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই

জহিরুল হক রাসেল, কুমিল্লা

জহিরুল হক রাসেল, কুমিল্লা

ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৯:০০ পিএম


কুমিল্লায় মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: ৭৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই

কুমিল্লার চান্দিনায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সরকারি প্রতিষ্ঠান ডাকঘর, মসজিদ, মাদরাসাসহ ৭৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। এতে ১১ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মাধাইয়া ইউনিয়নের মাধাইয়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

বাজারের একটি দোকানের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তেই পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

দোকানগুলোর বেশিরভাগই কাঠ-বাঁশ ও টিন শেডের। ফলে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত অন্য দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

আগুনে বাজারটির বেশিরভাগ অংশই ভস্মীভূত হয়েছে।

পানির উৎস বাজার থেকে কিছুটা দূরে থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়েছে দমকল কর্মীদের।

এছাড়াও আগুনের শিখার প্রভাবে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হয়ে যায়। এতে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চান্দিনা, কুমিল্লা ও দাউদকান্দি থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট কাজ করে। দমকল কর্মীরা এক টানা সাড়ে ৩ ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আন্ততে সক্ষম হয়। ততক্ষণে ৭৩টি প্রতিষ্ঠান একে বাড়েই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

অগ্নিকাণ্ডে অর্পিতা ইলেকট্রনিক্স নামের একটি ফ্রিজ এসি ও টিভি দোকানের ৮০ লাখ, লোপা এন্টারপ্রাইজের ৮০ লাখ, মান্নান ভেটেনারি নামের একটি ঔষধের দোকানের ৮০ লাখ, স্বপন স্টোরের ৫০ লাখ, ভাই ভাই ক্রোকারিজের ৪০ লাখ টাকার মালামাল সহ ৭৩টি দোকানের ১১ কোটি ৯লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল সব পুড়ে যায় বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন।

এগুলোর মধ্যে ক্রোকারিজ, মিষ্টি দোকান, মুদি দোকান, কাপড় দোকান, জুতা দোকান, ওষুধ দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল।

মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কে. এম. জামাল বলেন- ৭৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পূরণে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইবো। পুরো বাজারে এখনও অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতচিহ্ন আর ছাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

এদিকে আগুনে মাধাইয়া বাজার শাহী জামে মসজিদ, দারুল উলুম মাদরাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স এবং মাধাইয়া বাজার ডাকঘর পুড়ে যায়।

এ ব্যাপারে ডাকঘর এর চান্দিনা উপজেলা পরিদর্শক আলী আমজাদ খাঁন জানান, মাধাইয়া ডাকঘরে কোন আর্থিক লেনদেন নেই। সেখানে চিঠিপত্র আদান-প্রদান হয়। আমাদের খুব বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়নি। তবে যে ভাড়া ঘরে ডাকঘরের কার্যক্রম হতো সেটি পুড়ে গেছে।

চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার অনয় কুমার ঘোষ বলেন, আমরা রাত ১১টা ৫০ মিনিটে খবর পেয়েছি। রাস্তায় যানজট ছিল। পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হয়েছে। ৬টি ইউনিট কাজ করে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে আগুন নিভাতে সক্ষম হয়েছি।

এ বিষয়ে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন বলেন, সকালে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ৭৩টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান একেবারেই পুড়ে গেছে। ডাকঘর, মসজিদ, মাদ্রাসাও ভস্মীভূত হয়েছে। আসলে এটা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি যা অপূরণীয়। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।

ইএইচ

Link copied!