Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫,

আসামি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম


ময়মনসিংহে ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন

ময়মনসিংহের তারাকান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার কুতুবপুর এলাকার সোলায়মানের পুত্র আশিকুর রহমান (৩৫), ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কুমারগাতি এলাকার ইসমাইলের পুত্র রাহাত হোসেন তন্ময় (২৫), রংপুরের কোতোয়ালি এলাকার গণেশপুর এলাকার দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর পুত্র মো. পরশ চৌধুরী শ্রাবণ (২৯) ও তারাকান্দা উপজেলার রুপচন্দ্রপুর এলাকার এমদাদুল হকের পুত্র মো. এহতেশামুল হক নিশাত (২৫)।

শনিবার সকাল ১১টায় পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয়ে এক প্রেস বিফিংয়ে মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার রাকিবুল আক্তার।

পিবিআই জানায়, নিহত অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম মো. আরিফুর রহমান (৪৬), তিনি লক্ষীপুর জেলার রামপুর থানার লামচরী গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম পুত্র। সে রায়পুর উপজেলার ৬নং পূর্ব কেরোয়া ইউনিয়নের মেম্বার ও একজন ফার্ণিচার ব্যবসায়ী ছিলেন।

গত ১ জানুয়ারি তারাকান্দা থানাধীন পিঠাসুতা গ্রামে পাকা রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকার সংবাদ দেয় থানা পুলিশ। পরে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করে।

নিহতের স্ত্রী আয়শা আক্তার বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তারের সার্বিক সহযোগিতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বে ২ জানুয়ারি থেকে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে মাত্র দুদিনের মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডে জড়িত অজ্ঞাত আসামিদের পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হন এবং হত্যাকান্ডের আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আসামি শ্রাবণ ঢাকায় অবস্থানরত লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ৬নং পূর্ব কেরোয়া ইউনিয়নের মেম্বার ও ফার্ণিচার ব্যবসায়ী আরিফুর রহমানের তথ্য সংগ্রহ করে এবং তাকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা সাজায়। গত ২৫ ডিসেম্বর শ্রাবণ ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে আসে এবং কয়েক দিন অবস্থান করে। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ থেকে তার বন্ধু তন্ময় ও নিশাতকে নিয়ে মিরপুর চলে যায়। সেখানে গিয়ে শ্রাবণ সুকৌশলে ভিকটিম আরিফুর রহমানকে মিরপুর-১ নম্বর এলাকা থেকে ডেকে নেয়। ভিকটিম আরিফুর রহমান সেখানে আসামাত্রই শ্রাবণ, আশিক, তন্ময় ও নিশাত মিলে তাকে ধরে ফেলে এবং প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের পূর্ব হতেই ভাড়া করে রাখা গাড়িতে উঠতে বলে। আরিফুর রহমান গাড়িতে উঠামাত্রই তারা ময়মনসিংহের দিকে রওনা করে। আসামিরা জিম্মি আরিফুর রহমানের ফোন দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে কল করায় এবং টাকা পাঠানোর জন্য এসএমএস করায়।

বিকাশ নম্বর হিসেবে আসামি আশিকের একটি নম্বর দেয়। গাজীপুরে জ্যামে গাড়ি আটকে গেলে ভিকটিম নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলে আসামিরা অপহরণের বিষয়টি যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য ভিকটিমকে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিমকে হত্যা করে তারাকান্দার পিঠাসুতা পাকা রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়।

হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও কেউ জড়িয়ে থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

ইএইচ

Link copied!