Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫,

কমেছে সবজির দাম, বিপাকে কৃষক

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

জানুয়ারি ১১, ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম


কমেছে সবজির দাম, বিপাকে কৃষক

পাইকারি বাজারে দুই কেজি ওজনের একটি ফুলকপি ১ টাকা তবু ক্রেতা সংকট, প্রতি কেজি  পেঁয়াজ, ৩০ টাকা কাঁচা মরিচ ২০ টাকা, সীম ২০ টাকা, টমেটো ২৫ টাকা,বেগুন ৩০ টাকা, আলু প্রকারভেদে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। প্রতি পিস ফুল কপির উৎপাদন খরচ ১০ থেকে ১৫ টাকা, প্রতি কেজির উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ৩০ টাকা। পরিবহন ভাড়া, টোল মিলে লোকসান আর লোকসান তবুও ধরে থাকা।

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাটে পাইকারি বাজারে এমন চিত্র প্রতিনিয়ত।

কৃষক শফিউল আলম আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমি চার হাজার ফুল কপি রোপণ করেছি প্রতি পিস চারা ৪ টাকা পিস করে কিনে বর্তমান ফুলকপি বাজারে নিয়ে এসে প্রতি পিস ফুল কপি বিক্রি করছি ১ টাকা পিস তবুও পাইকার নেই। বাড়িতে গিয়ে সব কপি কেটে ফেলবো।

ইদিলপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের সাজু মিয়া বলেন, জনগণ হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে সংসারের আয় ও ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পুরাটাই বৃথা। আগাম ফসলে কৃষক কিছুটা লাভবান হলেও মৌসুমি ফসলে একের পর লোকসানে সর্বস্বান্ত হচ্ছে কৃষক। প্রতিটি ফসলের সময় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে উচ্চ মূল্যে বীজ, সারা কীটনাশক কিনতে হয়। তাতে বেড়ে যায়  উৎপাদন খরচ। সেই উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হয়।

এতে আগ্রহ কমছে কৃষকের অদূর ভবিষ্যতে পরতে পারে নেতিবাচক প্রভাব।

ধাপেরহাট ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের কৃষক আজাদুল বলেন, কৃষকরা চায় ফসলের বাজার ভালো, ক্রেতারা চায় প্রতিটি ফসলের বাজার কম। কিন্তু এর জন্য কি করা দরকার তার সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা নেই কারো। কৃষকদের দিকে এগিয়ে আসে না কেউ। ব্যাংক এনজিও সবাই তেল মাথায় তেল দিতে ব্যস্ত। কৃষকের সুবিধা নেয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তি,সুবিধাবাদী। সে দিকে  দৃষ্টি নেই কারো।

কৃষিতে না আছে ফাঁকি, ঘুষ কৃষকরা মেধা শ্রম আর নগদ অর্থ ব্যয় করে সোনার ফসল উৎপাদন কাজে  রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে ঘাটে কাজ করে থাকে। এ কাজে কোনো অলসতা নেই। মাঠে ফসল ফলাতে একটু গড়িমসি হলেও ফসল  মুখ থুবড়ে পড়ে। শত কষ্ট উপেক্ষা  করে মাঠের ফসল হাটবাজারে আমদানি করে যদি লাভের মুখ না দেখে তাহলে এই কৃষকের মনোবল ভেঙে যায় এমনকি লোকসানে ঘানি টানতে থাকে মাসের পর বছর। সারাবছর ধরে আফসোসে করে। শত আফসোসের পরেও তারা ফসলের চাষ ছেড়ে বসে থাকে না। শত কষ্ট বুকে চেপে ধরে চাষ করে নতুন উদ্যোমে। সম্প্রতি সময়ে বাজারে ক্রেতা সংকট ও উৎপাদন বেশী দেখে মধ্যসত্বা ভোগী সিন্ডিকেট পার্টির জোক সাজোসে আলু, ফুলকপি, সীম, টমেটো, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, বেগুন সহ সকল কাঁচামাল কম দামে কিনে দেশের বিভিন্ন বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।

এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। এর একটা প্রতিকার চায় কৃষক। উৎপাদন খরচ কমাতে  সার,কীটনাশক ও বীজের দাম কমাতে হবে।

ইদিলপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রামের কৃষক আনছার আলী বলেন, কথা হচ্ছে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা টা বাঁধ বে কে ? কৃষকের কোনো দল বা সংগঠন না থাকায় তারা সংগঠিত হতেও পারে না। যারাই প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুবিধা নেয় তারাই লঙ্কায় গিয়ে হনুমান হয়ে যায়।তাই বাংলার কৃষি ও কৃষক  বাঁচাতে কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মতিউল আলম বলেন, সকল কাঁচা সবজি এক সঙ্গে বাজারে আসায় দাম কমে গেছে। এতে করে কৃষকের উৎপাদন খরচ উঠবে না। এ ঘটনা প্রতি বছরই ঘটে তবে এ বছর বেশী দাম কমেছে। যে সবজিগুলোর দাম বাজারে একসময় বেশী ছিল, সেগুলোর দাম বেশী কমেছে। কারণ কৃষক অতিরিক্ত লাভের আশায় বেশী চাষ করে।

বিআরইউ

Link copied!