Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫,

নরসিংদীতে বিএনপির কাণ্ডারি ভিপি খবিরুল

এম.এ আউয়াল, নরসিংদী

এম.এ আউয়াল, নরসিংদী

জানুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম


নরসিংদীতে বিএনপির কাণ্ডারি ভিপি খবিরুল

নরসিংদী বিএনপির রাজনীতিতে এক অনন্য নাম মো. খবিরুল ইসলাম বাবুল (ভিপি খবিরুল)। প্রায় তিন যুগের রাজনৈতিক জীবনে চরম ক্রান্তিকালের মধ্যেও সাহসিকতার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শক্ত হাতে।

ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে জেলার প্রতিটি মানুষের কাছে তিনি বেশ পরিচিত।

নরসিংদীতে বিএনপির রাজনীতিতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন ভিপি খবিরুল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে টানা ১৬ বছর সারাদেশে বিএনপি কঠিন সময় পার করলেও ভিপি খবিরুল নরসিংদীতে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত ও সুসংগঠিত রেখেছেন সর্বক্ষণ।

আন্দোলন সংগ্রামে কখনোই পেছনে তাকাননি। দলের হাজারো নেতাকর্মী হামলা-মামলার শিকার হলেও তাদের দেখভালের প্রায় সবটুকু দায়িত্বই পালন করেছেন। এমনকি জেল-জুলুম ও নির্যাতনে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে থাকা নেতাকর্মীদের পরিবারগুলোর খোঁজখবর রেখেছেন সর্বদাই।

বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে দলের দুঃসময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানার নির্দেশনায় বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত প্রত্যেকটি কর্মসূচি ভিপি খবিরুলের নেতৃত্বে নরসিংদীতে পালিত হয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীরা সাহসের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথ সরগরম রেখেছিলেন। পাশাপাশি তার নেতৃত্বে ঢাকায় দলের বড় বড় প্রত্যেকটি সভা-সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী নরসিংদী থেকে যোগ দিয়েছেন।

একজন মেধাবী ও ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে জেলা বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মহিলা দলসহ অঙ্গসংগঠনের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করার চেষ্টা করেছেন।

সর্বশেষ শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে নরসিংদী থেকে ভিপি খবিরুলের নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল বিএনপি।

একান্ত সাক্ষাৎকারে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি খবিরুল আমার সংবাদকে বলেন, ১৯৭৮ সালে সাটিরপাড়া কালী কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে স্কাউটের সাথে যুক্ত ছিলাম। তখন আমাদের স্কুলে আগমন ঘটে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের। আমার সৌভাগ্য আমি তখন স্কাউট হিসাবে গেইটে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে উনাকে অভ্যর্থনা জানাই। তখন তিনি আমার সাথে করমর্দন করেন। সেই থেকে আমি রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ভক্ত হয়ে বিএনপি তথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতি আনুগত্য হই এবং এ সংগঠনের পক্ষে কাজ করতে শুরু করি।

১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, নরসিংদী শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে আমাকে মনোনীত করা হয়। ১৯৮৫-৮৬ সালে এরশাদ সরকারের আমলে নিজের জীবনকে বাজি রেখে নরসিংদী সরকারি কলেজকে জাতীয় ছাত্র সমাজের দখল থেকে তাদের বিতাড়িত করে ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করি এবং ছাত্রদলের পূর্ণ প্যানেলকে নির্বাচিত করে তৎকালীন ধানমন্ডি বিএনপি অফিসে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে নরসিংদী জেলার সকল ছাত্র নেতৃবৃন্দকে নিয়ে দেখা করলে তিনি সবশেষে, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দলের নীতি ও আদর্শকে ধারণ করে চলার পরামর্শ প্রদান করেন। ১৯৮৬-৮৭ সালে নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমাকে এজিএস পদে নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮৭-৮৮ সালে আমাকে নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রদলের সভাপতি মনোনীত করা হয়।

১৯৯০ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নরসিংদী জেলা সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করি এবং নরসিংদীতে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী তীব্র ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলি। সেই সময় আমাকে প্রায় ৬৮টি মামলা মাথায় নিয়ে বছরের পর বছর বাড়ি ছাড়া থাকতে হয়েছে। ১৯৯০-৯১ ও ১৯৯১-৯২ সালে পরপর দুবার বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমাকে নরসিংদী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত করা হয়।

১৯৯৪ সালে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মনোনীত করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগের আন্দোলনের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখতে গেলে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়েছে। ১৯৯৮ সালে আমাকে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মনোনীত করা হয়।

২০০১ সালে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দেশনায়ক তারেক রহমানের সাথে কক্সবাজারে তিনদিন ব্যাপী ‘পলিটিক্যাল ট্যুর’ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি। ২০০২ সালে আমাকে পুনরায় নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মনোনীত করা হয়।

দীর্ঘ ১০-১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। ২০২৩-২৪ সালে ১৭টি মামলার আসামি হই এবং পরপর দুইবার গ্রেপ্তার হয়ে আমাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। বর্তমানে নরসিংদী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি।

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সারাদেশের মতো নরসিংদীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর শুরু হয় একের পর এক গায়েবি মামলা আর গ্রেপ্তারের মহোৎসব। বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়। তারপরও ভিপি খবিরুলের নেতৃত্বে আন্দোলন থেমে থাকেনি।

নরসিংদী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি খবিরুল আরও বলেন, আমরা এখন নতুন বাংলাদেশে নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। বর্তমানে আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা। আমি বিশ্বাস করি সবাই মিলে যদি ৩১ দফা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ সুন্দর একটি বাংলাদেশ পাবে। আমি আমার নরসিংদীর ২৬ লাখ জনগণের ঘরে ঘরে তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা পৌঁছে দেবো ইনশাআল্লাহ।

পরিশেষে তিনি সকলের দোয়া কামনা করেন।

ইএইচ

Link copied!