Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫,

নাচোলের মল্লিকপুরে জোড়া খুন মামলা

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আসামি শাহীনের

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১২, ২০২৫, ০২:২৬ পিএম


আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আসামি শাহীনের

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর বাজারে জোড়া খুনের মামলার অন্যতম ২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মামলার ১ নম্বর আসামি শাহিন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রোববার সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।  

পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন- গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর বাজারে শহিদ স্মৃতি সংঘের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠান চলাকালে খোলশী গ্রামের কিছু কিশোর অনুষ্ঠানস্থলে গোল হয়ে নাচানাচি করছিল। তাদের এই অবস্থা দেখে ১ নম্বর আসামি শাহিনের ভাতিজা তামিম নামের ১ জন তাদেরকে এসব করতে নিষেধ করে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তামিমের সাথে কথা কাটাকাটি ও তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।

একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মারামারি করতে করতে মাছপট্টির টিনশেডের নিচে চলে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে শাহিন তার সহযোগীদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং শাহিন তার পকেটে থাকা চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে, এতে মাসুদ ও রায়হান নামে দুই জন নিহত হন এবং চার জন আহত হন।

এ ঘটনায় নাচোল থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।

পুলিশ সুপার বলেন- গত ৬ জানুয়ারি  মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখাকে দেয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয় জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই মো. ফয়সাল হাসানকে। এরপর মামলার এজাহার নামীয় আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা শাখা অনুসন্ধান শুরু করে। একপর্যায়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও প্রযুক্তির সহায়তায় গত ৮ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ঢাকা জেলার সাভার থানা এলাকা হতে কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী এজাহার নামীয় ১ নম্বর আসামি মো. শাহিন রেজাকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার শাহিন নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাহির মল্লিকপুর গ্রামের মো. তোফজুল হকের ছেলে।  একই দিন এজাহার নামীয় ৭ নম্বর আসামি মো. সামাদ আলীকে (৩০) ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানা এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সামাদ বাহির মল্লিকপুর গ্রামের মো. আতাউর রহমানের ছেলে।

জেলা পুলিশের শীর্ষ এই কর্মকর্তা আরও বলেন- তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর জেলা গোয়েন্দা অফিসে হাজির করে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ১ নম্বর আসামি মো. শাহিন রেজার দেয়া তথ্যমতে এবং পরবর্তীতে তার দেখানো মতে ঘটনাস্থলের পাশে ময়লার স্তূপ থেকে লোকজনের উপস্থিতিতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাকুটি উদ্ধার করা হয়। শনিবার তাদেরকে আদালতে হাজির করলে আসামি মো. শাহিন রেজা দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। হত্যা কাণ্ডে জড়িত ২ জনসহ মোট ৪জনকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

পুলিশ সুপার আরো বলেন- ঘটনার আগে খলসী গ্রামের একটি পেয়ারা বাগানে স্থানীয় সালাম ও শাহীন পলিথিন (পিপি) বাঁধার কাজ করছিল। কাজ করাকালীন কোনো এক সময়ে শাহীন গোপনে সালামের প্রস্রাব করার ভিডিও ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়। বিষয়টি সালামের নজরে এলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসও হয়। তবে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আসলে কিকারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে তা অধিক তদন্ত করে বলা যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইয়াসির আরাফাত, গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহীন আকন্দসহ অন্যান্য কমৃকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইএইচ

Link copied!