Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫,

জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেল একটি পরিবার

ভোলা প্রতিনিধি

ভোলা প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম


জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেল একটি পরিবার

অবিশ্বাস, দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ, মনোমালিন্য ও স্বামী-স্ত্রীর সংসারে অশান্তি দিন দিন বেড়ে চলা ১ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও যখন দেখলেন কোন কুল কিনারা পাচ্ছেন না ৩ সন্তানের জননী গৃহবধূ  আয়শা বেগম (৩৫)। তখন সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য দ্বারস্থ হন জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান এর।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে স্বামী মো.আলাউদ্দিন ও আয়শা বেগম কে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডেকে তিনি উভয় পক্ষের কথা শুনেন এবং ৩ সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী-স্ত্রীকে বুজিয়ে শুনিয়ে  মীমাংসা করে দেন।এরপর  প্রায় ভেঙ্গে যাওয়া সংসার আগামীতে সুন্দর ও শান্তিময় হবে বলে জেলা প্রশাসক কে আশ্বস্ত করেন স্বামী-স্ত্রী উভয়। 

এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর জেলা শহরের অনেকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসককে। তারা বলেন জেলা প্রশাসক স্যারের অসম্ভব সুন্দর ও বিচক্ষণতায় ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেল ওই দম্পত্তির সংসার।

আয়শা ও আলাউদ্দিনের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ভোলার দৌলতখান উপজেলার  আলাউদ্দিন ও আয়শা বেগমের দীর্ঘ ১২ বছর আগে বিবাহ হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে প্রথমে ১ ছেলে ও পরে ২ মেয়ের জন্ম হয়। বিয়ের প্রথম দিকে তাদের সংসার সুখে-শান্তিতে চললেও কয়েক বছর পরে  এসে তাদের  মধ্যে অবিশ্বাস, পারিবারিক কলহ, মনোমালিন্য, সন্দেহ সৃষ্টি হয়। সংসারে যেনো অশান্তি লেগেই থাকতো। এর এক পর্যায় যখন অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়,তখন সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্ত্রী আয়শা বেগম আপ্রাণ চেষ্টা করেন সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য। সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যখন আর কোন কূল কিনারা দেখছেন না, যখন দেখলেন সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম ঠিক তখনই আয়শা বেগম ভোলার জেলা প্রশাসক  আজাদ জাহানের শরণাপন্ন হন। সংসার যাতে টিকিয়ে রাখা যায় তাই তিনি জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান স্বামী-স্ত্রীকে তার কার্যালয়ে নিয়ে এসে  উভয় পক্ষের কথা শুনেন। দীর্ঘক্ষণ আলাপ আলোচনা করে ৩ সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আন্তরিকতা ও বিচক্ষণতার সাথে স্বামী-স্ত্রীকে মিলিয়ে দিলেন। পরে তাদের দুজন দুজনের প্রতি মহব্বত, ভালোবাসা ও আন্তরিকতা যাতে সৃষ্টি হয় সেই পরামর্শ দিলেন। সুখে-শান্তিতে সংসার করার জন্য উপদেশ দিলেন এবং ভবিষ্যতে যাতে কোন ধরণের সমস্যা সৃষ্টি না হয় সে জন্য দু’জনের কাছ থেকে লিখিত রাখলেন। জেলা প্রশাসকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রায় ভেঙ্গে যাওয়া  থেকে রক্ষা পেলো একটি পরিবার।

স্ত্রী আয়শা বেগম বলেন, আমরা দুজন একজন আরেক জনের প্রতি সন্দেহ করতাম। সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। ডিসি স্যারের সহযোগিতা চাইইলে তিনি আমাদেরকে ডেকে মিলিয়ে দিয়েছেন। আমরা এখন সুখের সংসার করবো। আমাদের মধ্যে আর ঝগড়া ও ভুল বুঝাবুঝি থাকবে না।

স্বামী আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য ও ভুল বুঝাবুঝি চলছিলো। ডিসি স্যার আমাদেরকে মিলিয়ে দিয়েছে। এখন আর আমাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য ও ভুল বুঝাবুঝি থাকবে না। আগামী দিনগুলোতে আমরা দুজন মিলে সুখে শান্তিতে সংসার করবো ইনশাআল্লাহ।

এবিষয় ভোলা জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন,আমাদের সমাজে সামান্য ভুল বুঝাবুঝির কারণে অনেক সংসার ভেঙ্গে যায়। এতে দুটি পরিবার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আয়শা বেগম তার সংসারের অশান্তি ও সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করলে ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বামী-স্ত্রীকে ডেকে এনে উভয়ের কথা শুনেছি। পরে তাদের ৩ সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তাদেরকে মিলিয়ে দিয়েছি। দুজনে যাতে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও মহব্বত সৃষ্টি হয় এবং সংসার যাতে সুখে-শান্তিতে করতে পারে সে জন্য পরামর্শ দিয়েছি। 

তিনি বলেন,  সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়। তাই চেষ্টা করেছি এই দম্পতিকে মিলিয়ে দিয়ে তারা সংসার যাতে সুখে শান্তিতে করতে পারে। আশা করি তারা আগামী দিনগুলোতে সুন্দরভাবে সুখের সংসার করবে, তাদের জন্য শুভ কামনা রইলো।

আরএস
 

 

Link copied!