আরিফ হোসেন, বরিশাল:
জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
আরিফ হোসেন, বরিশাল:
জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
দীর্ঘ ৩০ বছর ৮ মাস পর আজ মঙ্গলবার বরিশাল নগরীর হেমায়েত উদ্দীন ঈদগা ময়দানে মেগা সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম।
আর এবারের এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের অন্যতম ক্রেইজ জামায়াতের আমীর ডা: শফিকুর রহমান।
বরিশালে এক জেনারেশন পর এবারে সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাড়িয়েছে জামায়াত। সবাই ধারনা করছেন, আজ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ হবে বরিশাল শহরে।
সব সময়ের মতো এবারেও সর্বোচ্চ শৃঙ্খলার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বরিশাল মেট্রো পুলিশ। যানবাহনের শৃঙ্খলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য পয়েন্টে পয়েন্টে বাড়ানো হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা।
এবারে শুধু জামায়াত নেতা কর্মী নয়, ডা: শফিকুর রহমানের বক্তব্য শুনতে সব বয়সি সাধারণ মানুষের আজ সকাল থেকেই ভিড় করছেন বরিশালে।
৫ আগস্টের পর এ পর্যন্ত ডা: শফিকুর তার প্রতিটি বলনে সর্বোচ্চ মেধা ও মননের পরিচয় দিয়েছেন।
বরিশাল মহানগর জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা: শফিকুর রহমান তিনি সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করে সেখানেই ডাক্তারি শুরু করার সময় দল তাকে দ্বীনের পথে কাজ করার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পাওয়ার পরক্ষণেই যিনি সাদা কাগজে ইস্তফা দিয়ে দ্বীনের কাজে নেমে পড়েন এবং আজ পর্যন্ত মেধা ও মননের বিকাশ ঘটিয়ে নিজেকে অনন্য রাজনীতিবিদ হিসেবে গড়ে তুলে দলীয় নেতাকর্মীসহ লক্ষ কোটি জনতার হৃদয় জয় করেছেন তিনি।
আজ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বরিশাল মহানগর ও জেলা আয়োজনে নগরীর কেন্দ্রীয় হেমায়েত উদ্দীন ঈদগাঁ ময়দানে দলীয় কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে দুপুর ২ টায় যোগ দেবেন। এছাড়াও সকাল ৯টায় তিনি শিল্পকলা একাডেমিতে নারী সমাবেশে যোগ দেন।
এদিকে তাকে স্বাগত জানাতে বর্ণাঢ্য সাজে সেজেছে গোটা নগরী। এরই অংশ হিসেবে ভূরঘাটা থেকে জিলাস্কুল মোড় পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে নয়নাভিরাম বৃহৎ তোরণ। পাড়া মহল্লায় নেমেছে আনন্দ মিছিল।
কর্মী সমাবেশ উপলক্ষ্যে শৃঙ্খলার দায়িত্বে রয়েছে প্রায় ৪শ` স্বেচ্ছাসেবক।
অন্যদিকে লক্ষ করা গেছে সকাল থেকেই দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকরা বাস যোগে বরিশালে আসতে শুরু করেছে।
নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা যাচ্ছে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে বিভিন্ন পরিবহন।
আয়োজক কমিটি জানিয়েছেন, সমাবেশ যোগ দিতে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে দুই শতাধিকের বেশি বাস ও পিকআপ, মিনিবাস ও থ্রি হুইলার, ট্রাক আসবে প্রায় এক হাজার বেশি।
তবে মঞ্চ থেকে অন্তত ২ কিলোমিটার দূরে এসব যানবাহন থামিয়ে নেতাকর্মী-সমর্থকরা সড়কপথে মিছিল আকারে আসতে শুরু করবে।
এছাড়া একই সময় ১০ টি বিশালাকারের লঞ্চ, ২০টি মাঝারি লঞ্চ ও অন্তত একশ` ট্রলারে করেও নেতাকর্মী-সমর্থকরা নদীপথে বরিশাল এসে লঞ্চঘাট, ডিসিঘাট ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সংলগ্ন ঘাটে ভিড়বে। তবে ইতিমধ্যে অসংখ্য বাস,ট্রাক, এসে পৌঁছেন শহরের বিভিন্ন স্থানে।
মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা যাচ্ছে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের।
ইতিমধ্যে মঞ্চ থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১২০টি মাইক লাগানো হয়েছে। ইলেক্ট্রনিক ডিসপ্লে থাকবে প্রায় ৮টি। জনসভা স্থল ঈদগাহ মাঠে আসতে না পারলেও সদর রোড, পোর্ট রোড, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, আলেকান্দা, বান্দ রোড, চাঁদমারি এলাকা সমূহ থেকে সমাবেশের সব বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে মাইকের শব্দ স্পষ্ট করতে সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল কাজ করবে। জামায়াত আমির দুপুর দু’টার পর মঞ্চে ওঠার সাথে সাথে গোটা বরিশাল নগরীতে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি উচ্চারিত হবে সমস্বরে। প্রধান অতিথি মঞ্চে ওঠার পর ও বক্তৃতা শুরুর আগেও সমস্বরে উচ্চারিত হবে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি।
এদিকে সমাবেশস্থলে নেতাকর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসা ও যাবার সময় সব সড়ক ও নৌ যানকে সীমিত গতি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দ্রুত গতি নিয়ন্ত্রণে পথে পথে রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক।
বরিশাল মহানগর জামায়াতে এক নেতা বলেন, গত ১৭ বছরের মধ্যে এই প্রথম আজকে জামায়াত নেতাকর্মীরা মুক্ত বিহঙ্গে দলীয় কর্মসূচি পালন করবে আজ।
কর্মী সমাবেশ প্রধান অতিথি থাকছেন দেশের বর্তমান রাজনীতির মেধা, সততা ও অহিংসার নেতৃত্ব দানকারী সুপার ক্রেজ ডা: শফিকুর রহমান।
তিনি দেশের চলমান পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তা বাহক শফিকুর রহমানের এই সমাবেশে আগমন উপলক্ষ্যে দেশে আগামীর পথচলায় ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের বার্তা বহন করবে।
ইতিমধ্যে তিনি ঝালকাঠির কায়েদ সাহেবের মাদ্রাসা ও ছারছীনা মাদ্রাসা পরিদর্শন করেছেন।
আজ সকাল তিনি চরমোনাই যেতে পারেন বলে শোনা গেছে। সবদিক বিবেচনায় আজকের দিনটিকে বরিশালবাসীও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
৩০ বছর পর দেশের এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পর আয়োজিত এই কর্মী সমাবেশকে দেখা দিবে মেগা সমাবেশ হিসেবে।
জামায়াত আমিরের আগমনে ঘুরে গেছে বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গনও। গত ১৭ বছরে যে দলটির কাউকে নি:শ্বাস পর্যন্ত ঠিকমতো নিতে দেয়া হয়নি। পুলিশের যন্ত্রণায় নিজ ঘরে ঘুমাতে পর্যন্ত পারেনি কর্মীরা। আজ সেই পুলিশ তাদের কঠোর ভাবে দিচ্ছে পাহারা ও নিরাপত্তা।
দেখা গেছে বিগত বছরগুলোতে যে রাজপথে লুকোচুরি করে স্লোগান দিতে হতো জামায়াতে ইসলামী কর্মীদের। আজ সেই রাজপথ জামায়েত ইসলামের নেতাকর্মীদের স্লোগান ও মিছিলে মুখরিত গোটা বরিশাল শহর।
বিআরইউ