মো. ফয়েজ, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)
জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
মো. ফয়েজ, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)
জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪৩১৬তম হয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে কৃষক পরিবারের সন্তান শিমা আক্তার।
এক ঘণ্টা সময়ের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় শিমা পেয়েছেন ৮০ দশমিক ০৫। তার মেরিট স্কোর ১৭৪ দশমিক ০৫। তার ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ। তার এ কৃতিত্বে বুধবার কমলনগর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
প্রেসক্লাবের সভাপতি ইউছুফ আলী মিঠু`র সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আইয়ুব নগর ফাউন্ডেশনের সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম আইয়ুব। বিশেষ অতিথি ছিলেন, হাজিরহাট হামেদিয়া কামিল মাদ্রাসা সাবেক অধ্যক্ষ মাও জায়েদ হোছাইন ফারুকী ও হাজিরহাট উপকূল সরকারি কলেজ সাবেক অধ্যক্ষ আবদুল মোতালেব। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো ফয়েজের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, হাজিরহাট উপকূল কলেজের অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন তালুকদার, হাজিরহাট হামেদিয়া কামিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাও দেলওয়ার হোসেন, হাজিরহাট মিল্লাত সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাখাওয়াত হোসেন, চরকালকিনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বেলায়েত, লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইন্সট্রাক্টর মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
জানা যায়, কৃষক পরিবারের সন্তান শিমা আক্তার ছোটবেলা থেকে মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখতেন। নিজের চেষ্টা, পরিবারের সদস্যসহ শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় অদম্য মেধাবী এ শিক্ষার্থী নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। কোনো বাধাই দমিয়ে রাখতে পারেনি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বেড়ে উঠা শিমার শিক্ষাজীবনের পথ চলাকে। অদম্য সেই শিমা এবার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
শিমা আক্তার লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের এক অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান। বাবা মো. আলী আহাম্মদ পাটওয়ারী পেশায় একজন সাধারণ কৃষক ও মা আয়েশা বেগম গৃহিণী। ৩ বোন ৩ ভাইয়ের মধ্যে শিমা ৫ম।
শিমা আক্তার কালকিনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৪৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০২১ সালে জিপিএ-৪.৮৯ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। পরে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৪.৮৩ পান তিনি। এ ছাড়া শিমা শিক্ষাজীবনে বৃত্তিসহ বিভিন্ন মেধা নির্বাচনি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিমা আক্তার বলেন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চান্স পাওয়ায় প্রথমেই মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। আর সেই লক্ষ্যে আমি লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছি। সরকারি মেডিকেলে চান্স পেয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। আমি প্রথমে মনে করেছি মেডিকেল কলেজে চান্স পেলেও আমার পক্ষে এ সাগর পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। আজ প্রেসক্লাব আমার পাশে দাড়িয়েছে। এ জন্য আমি প্রেসক্লাবের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যাতে একজন আদর্শবান ডাক্তার হতে পারি।
শিমা আরও বলেন, আমি সাধারণ কৃষক পরিবারের একজন সন্তান হওয়ায় নিজে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে বাবার কৃষি কাজেও সহযোগিতা করতাম। আমার এই ভালো ফলাফলের পেছনে মা-বাবা ও শিক্ষকদের অবদান অপরিসীম।
আরএস