কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাইদ আহমেদের ক্ষমতার দাপট আর নানা অপকর্মে ইমেজ সংকটে পড়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, সাইদের অকর্মের কারণে এলাকায় বিএনপিকে খারাপ চোখে দেখছে জনসাধারণ। ফলে আগামী নির্বাচনে ভোটার ও জনগণের নিকট ক্ষুণ্ন হচ্ছে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের ভাবমূর্তি।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান তথা ৫ আগস্টের পর দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে এলাকায় ক্ষমতার দাপটে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছেন সাইদ আহমেদ। তার অপকর্ম আর নানামুখী দখল ঠেকাতে জেলা বিএনপি থেকে ইতিপূর্বে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও থেমে নেই তার অনিয়ম। এতে স্থানীয় বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপির স্থানীয় কর্মী সমর্থকরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করে বিভিন্নভাবে দখলদারি, জলমহালের ইজারাদারের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন, সেচ প্রকল্পেরের নামে চাঁদাবাজি, কৃষি জমির মাটি বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের মাধ্যমে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে ব্যাপক আলোচনা আর সমালোচনা বইছে সাইদ আহমেদ বিরুদ্ধে।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা যায়, সৈয়দ সাইদ আহমেদ অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্ব থেকে গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। গত ২৫ আগস্ট অষ্টগ্রাম উপজেলার মেঘনা নদীতে তার নেতৃত্বে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের সময় সেনাবাহিনী তা জব্দ করে।
এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সবই সত্য। তার এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অষ্টগ্রাম উপজেলায় বিএনপি মারাত্মক ইমেজ সংকটে পড়েছে। আমাদের দলের চরম ক্ষতি করছে সাইদ আহমেদ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ আমরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলাম। এখনো কোন প্রতিকার মিলেনি।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, অষ্টগ্রাম বিএনপি নেতা হান্নান ভুঁইয়া, ভূলন মেম্বার, বাচ্চু মেম্বার, ইব্রাহিম মেম্বার, শাহাবুদ্দিনসহ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলায় নাম দিয়েছেন সভাপতি সাইদ আহমেদ। শুধু মামলা দিয়ে ক্ষান্ত নয়, অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিনকে দিয়ে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. শাহাবুদ্দিনকে মামলার আসামি করে তার লিজ নেওয়া মাছের ঘের দখল করে নেন সভাপতি।
এ বিষয়ে তিনি জানান, আমাকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। আমাকে ঘরছাড়া করে। এছাড়া এলাকায় সব ধরনের কাজে সাইদ আহমেদকে চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হয়। তার অত্যাচারে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে সৈয়দ সাইদ আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জেলা বিনএপি থেকে আমাকে নোটিশ দিয়েছে আমি তার জবাব দিয়েছি। এখানকার নেতাকর্মীরা সবাই টাউট ও বাটপার। পরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা, জলমহালে চাঁদাবাজি, দখলদারি, অবৈধ বালু উত্তোলন, টাকা বিনিময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মামলা থেকে দায়মুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সবই সত্য। তার এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অষ্টগ্রাম উপজেলায় বিএনপি মারাত্মক ইমেজ সংকটে পড়েছে। আমাদের দলের চরম ক্ষতি করছে সাইদ আহমেদ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ আমরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলাম। এখনো কোন প্রতিকার মিলেনি।
ইএইচ